ভবিষ্যৎ নিরাপত্তায় পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এজন্য বেশি করে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী ২০ বছরে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ করতে যা প্রয়োজন সেই অনুযায়ি পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। ডিআরউই সাগর-রুনি মিলনায়তনে মিট দ্যা রিপোর্টার্স অনুষ্ঠিত হয়। ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশাহ।
মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জ্বালানি তেলের দাম না কমানো, জ্বালানি তেলের মান উন্নত করা, এলপিজি এর নতুন দাম নির্ধারণ করা, এলএনজি আমদানিতে ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি, আরও বেশি বিদ্যুৎ আমদানি, দেশিয় কয়লা ব্যবহারে পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গিকার বাস্তবায়ন সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য। যে অঙ্গিকার করে ক্ষমতায় আসা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতেই কাজ করা হচ্ছে। এজন্য শক্তিশালি প্রশাসন প্রয়োজন।
প্রতিমন্ত্রী এসময় বলেন, নাইকো রিসোর্সকে কাজ দেয়া ভুল হয়েছে। নাইকোর সাথে আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান মামলায় জয়ী হওয়ার জন্য নতুন করে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়েই নাইকোর অবস্থা ভাল না। আগামী ২ থেকে ৬ নভেম্বর লণ্ডনে এই শুনানি হবে।
দেশের কয়লা ব্যবহারে পানি ব্যবস্থাপনা একটি অন্যতম বাধা বলে তিনি জানান। বলেন, বাংলাদেশে কয়লা খনি এলাকায় প্রচুর পানি। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এই ধরণের খনি নেই। এই পানি কীভাবে ব্যবস্থাপনা করা হবে তা জানা নেই। তাই আমদানি করা কয়লার উপর গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবিচিছন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় কয়লার একটা বড় ভুমিকা থাকবে। কয়লা ব্যবহারে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বিষয়ে তিনি বলেন, বিরোধীতাকে সব সময় ইতিবাচক হিসেবে দেখি। যারা বিরোধীতা করছেন তাদের সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এতে হয়তো ধারনার পরিবর্তন ঘটতে পারে। বিদ্যুৎ দরকার আবার পরিবেশেরর দিকেও নজর দিতে হবে। দুদিক খেয়াল রেখেই আগানো হচ্ছে।
আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এলএনজি আমদানির জন্য চূড়ান্ত চুক্তি করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ভ’টানের অর্থ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী আগামী ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করবেন বলে তিনি জানান। এসময় ভ’টান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয় আলোচনা হবে। তবে ভ’টান থেকে বিদ্যুৎ আনতে ভারতেরও সম্মতি প্রয়োজন বলে তিনি জানান। জ্বালানি তেলের দাম না কমিয়ে মান উন্নত করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বায়ু বিদ্যুতের জন্য ১৩টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানে বায়ু পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আগামী এক বছরের মধ্যে দেশের বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনার কথা জানা যাবে।
বিদ্যুৎখাতকে ধীরে ধীরে সয়ংসম্পূর্ণ করা হবে বলে তিনি জানান। বলেন, পর্যায়ক্রমে এখাত থেকে ভর্তূকি তুলে দেয়া হবে। যদিও এখনই এই খাতে ভর্তূকি দেয়া হয়না। বাড়তি প্রয়োজনীয় অর্থ সরকার ঋণ হিসেবে দিয়ে থাকে। গত বছর এই অর্থের ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ বিভাগ ফেরত দিয়েছে।