ভারতের দুই কোম্পানির সাথে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সমঝোতা
ভারতের দুই কোম্পানির সাথে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সমঝোতা সই করল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। ভারতের রিলায়েন্স ও আদানি বাংলাদেশে চার হাজার ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কেন্দ্র স্থাপন করবে। এজন্য প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে তারা। বিশেষ আইনে প্রতিযোগিতা ছাড়া এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।
শনিবার বিদ্যুৎ ভবনে রিলায়েন্স ও আদানির সাথে এবিষয়ে আলাদা আলাদা দুটি সমঝোতা সই করেছে পিডিবি। চূড়ান্ত চুক্তির ৩০ মাসের মধ্যে এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে জানানো হয়েছে।
সমঝোতা অনুযায়ি, রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেড ৭৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার চারটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করবে। যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা তিন হাজার মেগাওযাট। সবগুলো কেন্দ্রই হবে গ্যাস ভিত্তিক। তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানো হবে। এজন্য এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশন টার্মিনাল করা হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রর স্থান এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। গ্রহণযোগ্য স্থান নির্বাচন করে পরে করা হবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে।
আদানি পাওয়ার লিমিটেড ৮০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে। যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। আমদানি করা কয়লা দিয়ে এই কেন্দ্র চলবে। মহেশখালি বা গ্রহণযোগ্য অন্য কোথাও এই কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
এছাড়াও বাংলাদেশের জন্য ভারতে দুটি কেন্দ্র করার সমঝোতা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
সমঝোতা সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সভাপতিত্ব করেন বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম, জ্বালানি বিভাগের সচিব আবুবকর সিদ্দিক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) চেয়ারম্যান শেখ শাহিনুল ইসলাম খান, আদানি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনথোনি জেসকা আদানী, রিলায়েন্সের গ্রুপ প্রেসিডেন্ট টনি জেসুদাসেন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আসকারি জাইদি।
স্ব স্ব অবস্থান থেকে সমঝোতা সই করেন পিডিবি’র সচিব জহিরুল হক, রিলায়েন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট সমির কুমার গুপ্ত ও আদানি প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা ভিনেত জয়েন।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই চুক্তির মধ্য দিয়ে নতুন দিনের সূচনা হল। দক্ষিণ এশিয়ার এক দেশ অন্যদেশের সহযোগি হিসেবে চলতে শুরু করেছে। এই সহযোগিতা আরও বাড়বে। নেপাল ও ভূটান থেকে বিদ্যুৎ আনার উদ্যোগ চলছে। এবিষয়ে ভারতের সহযোগিতা লাগবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের উত্তম পরিবেশ আছে। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখানে বিনিয়োগ করতে চাইছে। বিদ্যুৎখাতে এরই মধ্যে চিন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ভারতের বড় দুই কোম্পানির সাথে সমঝোতা হল। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন আর ঘাটতি নেই। শিল্পসহ সকল আবেদনকারিকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে। সংযোগ পেতে এখন আর কোন বিধিনিষেধ থাকছে না।