ভূমিকম্পে ১০ ফুট সরে গেছে কাঠমান্ডু
আট দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভুমিকম্পে হিমালয়কন্যা নেপালের কাঠমান্ডু উপত্যকার তলদেশ দশ ফুট (৩ মিটার) দক্ষিণে সরে গেছে।
মঙ্গলবার কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকটনিকস বিভাগের বিশেষজ্ঞ জেমস জ্যাকসনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
জেমস বলেন, রাজধানী কাঠমান্ডু দশ ফুট (৩ মিটার) দক্ষিণে সরে গেছে। তবে এভারেস্টের উচ্চতায় এ ভূমিকম্প কোনো প্রভাব ফেলেনি। আগের মতোই রয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গের উচ্চতা।
শনিবার নেপাল, বাংলাদেশ ও ভারতে একযোগে আঘাত হানে শক্তিশালী এই ভূমিকম্প। উৎপত্তিস্থলে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৯।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস’র তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল কাঠমাণ্ডুর অদূরে পোখরার কাছে লামজুং। এর ২৬ মিনিট পর দ্বিতীয় এবং ৮ মিনিট পর তৃতীয় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এরপর পরবর্তী চব্বিশ ঘণ্টায় বিভিন্ন মাত্রার পঞ্চন্নটি কম্পন অনুভূত হয় বলে স্থানীয়দের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায় সংবাদমাধ্যম।
মূল ভূমিকম্প পরে রোববার দুপুর ১টা ১৩ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) নেপাল, বাংলাদেশ ও ভারতে আবারো একটি নতুন ভূমিকম্প আঘাত হানে। ইউরোপীয়-ভুমধ্যসাগরীয় সিসমোলজিক্যাল সেন্টারের (ইএমএসসি) হিসাবে রিখটার স্কেলে এ কম্পনের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৫। তবে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্য মতে, এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭।
নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে ৮৫ কিলোমিটার পূর্বে ও কোদারি থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল বলে জানিয়েছে ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে।
এরপর সোমবারও (২৭ এপ্রিল) ভূকম্পনে কেঁপে ওঠে নেপাল। ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভের তথ্যমতে এই কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ১।
এ নিয়ে গত তিন দিনে প্রায় ৬০টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত নেপালে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নেপালে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার তিনশ’ ১০ জনে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান রামেশ্বর দাঙ্গাল সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেমস জ্যাকসনের বিশ্লেষণের সঙ্গে এক মত পোষণ করেছেন এডেলেইডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌতবিজ্ঞানের প্রধান স্যান্ডি স্টিকি।
তিনি বলেন, ভূমিকম্পের প্রভাবে ইউরেশিয়ার দিকে ধাবমান ভারতীয় উপমহাদেশের ভূ-প্লেটের সীমানা আলাদা হয়ে গেছে। এই ধাক্কা প্রায় ১০ ডিগ্রির মতো উত্তর-উত্তরপূর্বে পড়েছে। ফলে কাঠমান্ডুর অবস্থান তিন মিটার পর্যন্ত দক্ষিণে সরে গেছে।