মানুষ সুখ পেলে দুঃখের কথা ভুলে যায় – প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ সুখ পেলে দুঃখের কথা ভুলে যায়। আর দুঃখ পেলে সুখের কথা স্মরণ করেন। আগে ১৪ ঘন্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং ছিল। এখন এক ঘন্টা করে করা হচ্ছে। আগের অবস্থা রাখলে অভ্যাস ঠিক থাকতো।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ে অফিস করতে এসে তিনি একথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী নতুন শিল্প এলাকায় আলাদা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, দেশের ২১টি অঞ্চলে শিল্প এলাকা গড়ে তোলা হবে। এই সব শিল্প এলাকায় আলাদা আলাদা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে হবে। এজন্য এখনই পরিকল্পনা করে আগাতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগে এই কেন্দ্র করতে হবে।
বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সুইচ বন্ধ করে বের হতে হবে। বিদ্যুৎ কম ব্যবহার করলে বিলও কম আসবে। বিল কম আসলে ঘুষ দিয়ে বিল কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে এখন ৭০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। খুব দ্রুত সময়ে শতভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। দেশের উন্নয়নের প্রধান চালিকা শক্তি জ্বালানি। দেশকে মধ্য আয়ের দেশ করতে, অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।  দেশের বৃহত্তর জনগোষ্টিকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন হবে না। শহরের সাথে সাথে গ্রামেরও উন্নয়ন করতে হবে। দুর্গম এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ পৌছে দিতে হবে। তবে সৌর বিদ্যুতের জন্য কৃষি ও শিল্প জমি নষ্ট করা যাবে না। যে জমিতে শিল্প কারখানা হতে পারে কিম্বা ফসল হয়, সেই জমি নষ্ট করা যাবে না। এসব জমি রক্ষা করেই সৌর প্যানেল বসাতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর পরামর্শ দেন তিনি।
ভারত থেকে আরও বিদ্যুৎ আনা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। আরও ৫০০ মেগাওয়াট একই পথে আনা হবে। ত্রিপুরা দিয়ে ও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা হবে। প্রতিবেশি দেশে থেকে বিদ্যুৎ আনার বিষয়টি ছিল যুগান্তকারি। এই অঞ্চলের অন্য কোন দেশ এমন করতে পারেনি। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে দেশের লাভ হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, নেপাল ভূটান থেকে বিদ্যুৎ আনতে ভারত ট্রানজিট দিতে সম্মত হয়েছে। সেখানে যৌথভাবে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে পুরানো বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাদ দিয়ে নতুন যন্ত্র স্থাপন করতে হবে। এতে অল্প জ্বালানিতে বেশি উৎপাদন করা যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের চাহিদা পরিবর্তন হয়েগেছে। আগে মানুষ ভাত চাইতো। এখন চাই বিদ্যুৎ। এতে বাঝা যায় মানুষের জীবন মান বদলেছে। অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। মানুষের আর অভাব নেই। গ্রামের অর্থনীতি যত শক্তিশালি হবে তত ভাল।
তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি হয়েছে গত তিন মাস। রাজনীতি জনগণের জন্য। আর সেই জনগণকে পুড়িয়ে রাজনীতি করা হয়েছে।