মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের কাজের সময় বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত

রাজধানীর মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের কাজের সময় ডিপিডিসির বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়। কিন্ত চাহিদার তুলনায় কম বলে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে। লাইনটি মেরামত করতে ৪ থেকে ৫ দিন সময় লাগবে বলে ডিপিডিসি জানায়।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৮ মিনিটে মৌচাক মার্কেটের সামনের রাস্তায় উলন গ্রীড থেকে ধানমন্ডি গ্রীডে আসা ১৩২ কেভি আন্ডার গ্রাউন্ড ক্যাবল সার্কিট-১ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ধানমন্ডির একাংশ, পরিবাগ, এলিফ্যান্ড রোড, শেরেবাংলানগর, কাকরাইল, শান্তিনগর, মগবাজার, মালিবাগ, শান্তিবাগ, রাজারবাগ, রমনা, সিদ্ধেশ্বরী, আজিমপুর এবং এর আশেপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিকল্প লাইনের মাধ্যমে এসব এলাকায় কিছু বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও তা চাহিদার তুলনায় কম। ফলে এসব এলাকায় এক ঘন্টা পর পর লোডশেডিং হচ্ছে।
ডিপিডিসি সূত্র জানায়, এই ধরণের ক্যাবলের ত্র“টি স্থানীয় প্রকৌশলীর ঠিক করতে পারবে না। এজন্য চীন থেকে প্রকৌশলী আনা হবে। গতকালই খবর পাঠানো হয়েছে। চীনা প্রকৌশলীরা দেশে আসলে মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। এর আগে ডিপিডিসি এই সংযোগ চালু করতে যেসব যন্ত্রপাতি দরকার হতে পারে তা সংগ্রহ করে রাখার কাজই করছে।
ডিপিডিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম জানান, ক্যাবল ফল্টের কারণে ডিপিডিসি এলাকায় প্রায় ৫০ মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং করা হচ্ছে। বিদেশি প্রকৌশলীরা আসলেই মেরামতের কাজ শুরু হবে। এই মেরামতের কাজ শেষ করতে ৪ থেকে ৫ দিন সময় লাগতে পারে। তিনি জানান, এর আগে পর্যন্ত বিকল্প উপায়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়গুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
অন্যদিকে প্রকৌশলীর অভাবে তিনদিনেও ভাষানটেকে অবস্থিত পিজিসিবির সাবস্টেশন মেরামতের কাজ শুরু করা যায় নি। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ভাষানটেকে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) একটি ১৩২ কেভি সাবস্টেশনের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ওয়াসার পানির পাইপ স্থাপনের কাজ করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে পিজিসিবি জানায়। অভিজ্ঞ প্রকৌশলী না থাকার কারণে মেরামতের কোনো কাজই হয়নি। এদিকে সাবস্টেশনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষের (ডেসকো) অধীন ক্যান্টনমেন্টসহ এর আশেপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকল্প উপয়ে ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। কিন্তু তাও চাহিদার তুলনা কম হওয়ার কারণে ঘন ঘন লোডশেডিং করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে ডেসকো।
পিজিসিবির একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নিজেদের প্রকৌশলীরা ক্ষতিগ্রস্ত সাবষ্টেশনের কাজ করতে পারবে না। তাই চীন থেকে প্রকৌশলী আনা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তারা বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। আজ বুধবার থেকে তাদের কাজ শুরু করা কথা রয়েছে।
এদিকে শনিবার সারাদেশে ওপর বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে বগুড়া, রাজশাহী, নাটোরসহ দেশের বহু এলাকায় বিদ্যুতের খুটি উপড়ে পড়ে, তার ছিড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তিনদিন পরও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। শহরে আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও গ্রাম এলাকা এখনো অন্ধকার। শহরেরই অনেক এলাকাতে এখনো রাস্তায় বিদ্যুতের তার পড়ে রয়েছে। বগুড়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, শহরের অর্ধেক অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হলেও শহর এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে আরো ১ দিন লাগবে। আর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, পল্লী বিদ্যুতের ৬ হাজার ৩শ কিলোমিটার লাইন। ঝড়ে পুরো লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই তিনদিনে ২০ হাজার গ্রাহককে সংযোগ দেয়া হয়েছে। বাকি গ্রাহকদের ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সংযোগ দেয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছে তারা।