রাজধানীতে ‘সিএনজি দুর্ভোগ’

গাড়িতে ২৪ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবসে রাস্তায় নেমে বিপত্তিতে পড়তে হয়েছে মানুষকে।

ছুটির পর এই সময়ে ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহনের সংখ্যা এমনিতেই কম থাকে। তার মধ্যে গ্যাসের অভাবে বুধবার সকাল থেকে অটোরিকশার সংখ্যাও কম দেখা গেছে।

আগের রাতে গ্যাস নিতে পারায় সকালে যারা অটোরিকশা নিয়ে বেরিয়েছেন, তারাও বেশি ভাড়া হাঁকছেন। ফলে লম্বা দূরত্বের যাত্রীদের পকেট থেকে বেশি টাকা যাচ্ছে।

ঈদের ছুটি কাটিয়ে বুধবার সকালে টঙ্গী থেকে কচুক্ষেতে এসেছেন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) চাকুরে সাঈফুল হক।

তিনি জানান, সাধারণ সময়ে ওই দূরত্বে তার আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা ভাড়া লাগলেও বুধবার দিতে হয়েছে সাড়ে ৫০০ টাকা।
ড্রাইভাররা বলতেছে গ্যাস নাই, ভাড়া বেশি দিতে হবে। চাপের মুখেই বাড়তি টাকা দিতে হল।

রেহানা বেগম নামের এক নারী কচুক্ষেতে যাওয়ার জন্য মিরপুর ১৪ থেকে অটোরিকশা খুঁজছিলেন।

এমনিতে ওই পথে ২০০ টাকা ভাড়া উঠলেও ফিলিং স্টেশন বন্ধ থাকার কারণ দেখিয়ে চালকরা সাড়ে ৩০০ টাকা  হাঁকছেন বলে জানালেন তিনি।

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফেরদৌস রহমান জানালেন, উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকা থেকে নীলক্ষেত যাওয়ার জন্য তাকে ১০০ টাকা বেশি ভাড়া দিতে হয়েছে।

বেশি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর এলাকার অটোরিকশা চালক রমজান আলী বলেন, দিনে ‍দুই থেকে তিনবার গ্যাস নেওয়া লাগে। কাইল থেইকা গ্যাস বন্ধ। রাত্রে যারা গ্যাস ভরতে পারছে, তারাই আজকে রাস্তায় বাইর হইছে। গাড়ি কম, তাই ভাড়াও বেশি।

বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য উৎপাদন বন্ধ থাকায় বুধবার প্রথম প্রহর থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার রাতে এই ঘোষণা আসার পর গ্যাসের জন্য ফিলিং স্টেশনগুলোতে ভিড় লেগে যায়। কিন্তু রাত ১২টায় ফিলিং স্টেশন বন্ধ করে দেওয়ায় গ্যাস না পেয়েই অনেককে ফিরতে হয়।

সেকান্দার মিয়া নামের এক অটোরিকশা চালক বলেন, “বিপদে তো আমরাও পড়সি। সিএনজি চালাইতে পারতেসি না। সকালে বাইর হইছিলাম, দুই ট্রিপ মাইরাই গ্যাস ফুরায়ে গ্যাছে। আমাগোরও তো বউ বাচ্চা আছে।”

বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারহান নূর বলেন, ঈদে বাড়ি যাওয়া এবং বাড়ি থেকে ফেরার সুবিধার জন্য সরকার ২৪ ঘণ্টা পাম্প খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু ঈদের একদিন পরেই ২৪ ঘণ্টা ফিলিং স্টেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত দিল। সরকারের এই সিদ্ধান্ত সংঘর্ষিক।

অবশ্য জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলছেন, যেসব গাড়ি সিএনজিতে চলে, সেগুলো তেলেও চালানো যায়। ফলে বড় কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।