রাশিয়ার গ্যাসের ওপর ইউরোপের নির্ভরতা ২০২০ নাগাদ থাকবে
রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংস বলছে, রাশিয়ার গ্যাসের ওপর ইউরোপের নির্ভরতা কমপক্ষে ২০২০ সাল পর্যন্ত বজায় থাকবে। ভিন্ন ক্ষেত্র না পাওয়া গেলে এ নির্ভরতা আরো বেশি সময় পর্যন্ত থাকতে পারে। খবর আরটি।
সংস্থাটি তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলছে, আপাতত ইউরোপের কাছে রাশিয়ার গ্যাসের কোনো বিকল্প নেই। ইউরোপে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রফতানি করতে পারে এমন দেশ খুব একটা নেই। তাছাড়া রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইন প্রজেক্টও ইউরোপে নেই।
ফিচ তাদের প্রতিবেদনে বলছে, ইউরোপ যদি রাশিয়ার গ্যাসের ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে চায়, তাহলে তাদের গ্যাসের সার্বিক চাহিদা কমাতে হবে, না হয় চাহিদা মেটাতে পারে এমন বিকল্প ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে হবে। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এ দুটোর একটিও সম্ভব নয়।
তবে ইউরোপ সর্বোচ্চ যে কাজটি করতে পারে, তা হলো রাশিয়া থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস কেনা কমিয়ে দেয়া। ফিচের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, আগামীতে ইউরোপে গ্যাসের চাহিদা শুধুই বাড়বে। অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং কয়লা ও নিউক্লিয়ারের তুলনায় গ্যাস দিয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদন বৃদ্ধির কারণে আগামী ১৫ বছর গ্যাসের ব্যবহার প্রতি বছর ১ দশমিক ৩ শতাংশ করে বাড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইউরোপেও পাথুরে গ্যাস বিপ্লব সাফল্য পাবে, এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ফিচ। সংস্থাটি বলছে, ইউরোপে আগামী এক দশকের মধ্যে পাথুরে গ্যাস উত্পাদনে গুরুত্বপূর্ণ বিপ্লব ঘটবে বলে আমরা মনে করি না। তবে এ সময়ের মধ্যে এটি প্রচলিত গ্যাস উত্পাদনের পতন ঠেকিয়ে ভারসাম্য তৈরি করতে পারে।
২০১৩ সালে ইউরোপের গ্যাস চাহিদা ছিল ৫৩০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার, যার মধ্যে রাশিয়া সরবরাহ করে ১৪৫ বিলিয়ন কিউবিক মিটার বা ২৭ শতাংশ।
ফিচ বলছে, ইউরোপ গ্যাসের বিকল্প হিসেবে তেল, কয়লা ও নিউক্লিয়ার শক্তি ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু এগুলো অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইউরোপ যদি তাদের বর্তমান অবকাঠামোয় সংস্কার আনতে চায়, তবে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ইউরো (২৬৪ বিলিয়ন) খরচ করতে হবে, আর এর সঙ্গে উচ্চ জ্বালানি খরচের সম্ভাবনা তো রয়েছেই।
তাছাড়া, গ্যাস ছাড়াও রাশিয়া ইউরোপের অন্য জ্বালানির অন্যতম প্রধান সরবরাহকারী। ২০১৩ সালে ইউরোপের নিউক্লিয়ার প্লান্টের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরোনিয়ামের ৩৬ শতাংশ সরবরাহ করে রাশিয়া।
নবায়নযোগ্য শক্তি যেমন সৌর ও বায়ুশক্তি ইউরোপের অন্যতম বিকল্প জ্বালানির ক্ষেত্র। যদিও এসব প্রজেক্টের ব্যয় প্রচলিত শক্তি উত্পাদন কাঠামোর তুলনায় এত বেশি যে সরকারের ভর্তুকি ছাড়া এগুলো চালানো কঠিনই।