রাস্তায় ঝুলে থাকা তার সরানো: প্রতিবেদন ১০দিন সময়
রাস্তায় ঝুলে থাকা তার সরানো কাজ ঝুলে গেল। এপরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার নতুন কোন সময় নির্ধারণ করা হলো না। একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটি আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে কোথায় কি অবস্থায় তার আছে তার প্রতিবেদন জমা দেবে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ি তিন মাসের মধ্যে পরিকল্পনা নেবে তথ্য যোগাযোগ মন্ত্রনালয়। যদি তথ্য যোগাযোগ মন্ত্রনালয় এই পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হয় তবে তখন পরিকলল্পনার উদ্যোগ নেবে বিদ্যুৎ বিভাগ।
মঙ্গলবার সকল পক্ষ একসাথে বৈঠক করে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সচিবালয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জোনাইদ আহমদ পলক, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম, ডিপিডিসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) নজরুল হাসান, ডেসকো ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরজাদ হোসেন, বিটিসিএল এর জিএম খান আতাউর রহমান, আইএসপি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান মন্জু, কোয়াব এর সাবেক সভাপতি এম আনোয়ার পারভেজসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহবায়ক বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ বজলুর রহমান। এই কমিটি ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তার বাস্তব অবস্থা তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন দেবে। কোন রাস্তায় মাটির নিচে তার নিয়ে যাওয়া সম্ভব কিন্তু তারপরও নেয়া হয়নি। কোন রাস্তায় মাটির নিচে তার নেয়া সম্ভব নয়। সামগ্রীক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ২০ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে কমিটি। এছাড়া বৈঠক থেকে আমাগী তিন মাসের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয়কে একটি পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয় পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হলে বিদ্যুৎ বিভাগ পরিকল্পনা করে সে অনুযায়ি কাজ করবে।
বৈঠক শেষে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সে অনুযায়ি এই কাজ করা হবে। কোয়াব ও আইএসপিএবি এরসাথে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঝুলন্ত তার পর্যায়ক্রমে অপসারণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেন অতিদ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় সে আহবান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভূগর্ভস্থ লাইন থাকা সত্বেও কোয়াব বা আইএসপি যদি তার ঝুলিয়ে রাখে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে ফাইবার এট হোম, সামিট কমিউনিকেশন লি. কতটা এলাকা ভূগর্ভস্থের আওতায় এনেছে তাও যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নসরুল হামিদ বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় আমরা তথ্য ও বিনোদন পৌঁছে দিতে চাই, কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে ঝুঁকিতে ফেলে নয়। সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করে ঢাকাকে সুন্দর নগরীতে পরিনত করতে চাই। এ জন্য সকলের সহযোগীতা প্রয়োজন।
এরআগে ৩০ অক্টোবর বৈঠক করে ১০ দিনের মধ্যে রাজধানির সকল ঝুলন্ত তার সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী। সে ১০ দিন পার হয়েছে। এখন নতুন করে আর কোন সময় দেয়া হল না। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর নতুন করে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, বিটিআরসি থেকে ভূগভস্থ অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল লাইন নির্মানের জন্য দুটি প্রতিষ্ঠান ফাইবার এটহোম এবং সামিট কমিউনিকেশন লি. লাইসেন্স নিয়েছে। রাজধানির অল্প কিছু এলাকায় মাটির নিচ দিয়ে ক্যাবল নেয়াও হয়েছে। কিছু এলাকায় ঝুলে থাকা তার কেটে দিয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ কোম্পানি ডিপিডিসি ও ডেসকো। যে সব এলাকায় তার কাটা হয়েছে সেসব স্থানে আবার নতুন করে এলোমেলো ভাবে তার ঝোলানো হয়েছে। তবে ৮০ ভাগ এলাকাতেই বিদ্যুতের খুঁটিতে এলোমেলো ভাবে তার ঝোলানো আছে। এটি যেমন ঝুঁকিপূর্ণ তেমনই দৃষ্টিকটু।