সমন্বয়হীনভাবে চলছে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন
সমন্বয়হীনভাবে চলছে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন। এই অবস্থা কাটিয়ে ভবিষ্যত বিদ্যুত উৎপাদন পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সঞ্চালন লাইন সম্প্রসারণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে পাওয়ারগ্রিড কোম্পানিকে (পিজিসিবি)। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অন্তত ১০ থেকে ২০ বছর পরের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিতে বলা হয়েছে।
বিদ্যুতের জাতীয় গ্রীড বিপর্যয়ের পরে ভবিষ্যৎ মোকাবেলায় এমনই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। অগ্রগতি পর্যালোচনা করে সোমবার বিদ্যুত বিভাগ এ নির্দেশনা দিয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে পিজিসিবি‘র সঞ্চালন ব্যবস্থা কোন কোন বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে মিল নেই। এ জন্য একটি সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে।
বৈঠক সূত্র জানায়, সরকার বিদ্যুত উৎপাদন ব্যবস্থার ব্যপক উন্নয়ন করছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে সারাদেশে বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। এজন্য এখন থেকে সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। কিন্তু কোন কোন েেত্র দেখা যায় পিজিসিবির উন্নয়ন পরিকল্পনায় সরকারের ল্যমাত্রা মাথায় রাখা হয়নি। ভবিষ্যতে কোন এলাকা থেকে কী পরিমান বিদ্যুত সঞ্চালন করতে হবে সে পরিকল্পনা মাথায় রেখে কাজ করা জরুরী।
ভবিষ্যত উৎপাদন বৃদ্ধিতে অন্তত ১০ থেকে ২০ বছরের অগ্রগতি পর্যালোচনায় নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। গতকাল বিদ্যুৎ বিভাগে পিজিসিবির উন্নয়ন প্রকল্পর অগ্রগতি পর্যালোচনা নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিদ্যুত জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম, পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনীসহ বিদ্যুত বিভাগ এবং পিজিসিবির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পিজিসিবি আমিন বাজার থেকে পুরাতন বিমানবন্দর পর্যন্ত ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন ও এসোসিয়েড সাবস্টেশন স্থাপন শেষ করেছে। বিবিয়ানা-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন ও ফেন্সুগঞ্জ-বিবিয়ানা ২৩০ কোভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ। আগামী ২০১৭ সালের ৩০ জুন প্রকল্পর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। দুটি সঞ্চালন প্রকল্পর কাজ ২০১০ এর জুলাইতে শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ভৌত অগ্রগতির ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। জাতীয় বিদ্যুত সঞ্চালন নেটওয়ার্ক উন্নয়ত করণ প্রকল্পর ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। জাইকার সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পটি ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০১৭ এর জুলাইতে। পূর্বাঞ্চলীয় ১৩২ কেভি গ্রীড নেটওয়ার্ক ২০১৬ সালের জুলাইতে, ৪০০/২৩০/১৩২ কেভি নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট এর কাজ ২০১৭ সালের জুলাইতে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলীয় সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে সম্ভাব্যতা জরি এবং পল্লী এলাকায় বিদ্যুত বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণে সাবস্টেশন এবং গ্রিড লাইনের সম্প্রসারণ কাজ চলছে। বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ২০১৭ এর ডিসেম্বরে প্রকল্পর কাজ শেষ হবে। এছাড়াও সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে আরো ১১টি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পিজিসিবি। যেগুলোর প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে এখন বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক হচ্ছে। তবে এখনও এসব প্রকল্পর চুড়ান্ত অনুমোদন বা অর্থ সংগ্রহ হয়নি বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।
বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, ১০ থেকে ২০ বছরের উগ্রগতি পর্যালোচনা করে প্রকল্প গ্রহন করতে হবে। কোন প্রকল্প গ্রহণের কয়েক বছরের মধ্যে যেন আবার একই যায়গাতে কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, পিজিসিবি’র কর্মকান্ডের সঙ্গে অন্য বিতরণ কোম্পানির উন্নয়ন প্রকল্প যাতে মিলে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য কোম্পানিগুরোর উন্নয়ন প্রকল্পর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে।
বৈঠকে ছয় মাসের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে জানানো হয়, চলতি অর্থবছরে গত ছয় মাসে আর্থিক এবং ভৌত উভয় অগ্রগতিতে পিছিয়ে রয়েছে পিজিসিবি। সাত প্রকল্পর ৬৫ দশমিক ৬৩ ভাগ অগ্রগতির ল্যমাত্রা নির্ধারণ করে অর্জন করা সম্ভব হয়েছে ৩৬ দশমিক ৩৮ ভাগ। জানুয়ারি পর্যন্ত ভৌত ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০৩ দশমিক ৭৪ ভাগ। কিন্তু অর্জন সম্ভব হয়েছে ৮২ দশমিক ২৬ ভাগ। গত বছর একই সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পে পিজিসিবির অগ্রগতি ছিল ১৪০ দশমিক ৪৫ ভাগ।