ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে খসড়া তৈরী
সার্কভূক্ত দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ কেনা বেচা করতে আইনি খসড়া কাঠামো তৈরী করা হয়েছে। আজ সোমবার খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে।
রোববার ঢাকায় শুরু হওয়া সার্ক এনার্জি রেগুলেটরদের বৈঠকে খসড়া তৈরী করা হয়।
হোটেল ওয়েস্টিনে এই বৈঠকের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সম্প্রতি সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে বিদ্যুতের সহযোগিতার চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সার্ক রেগুলটরা বৈঠক করছেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, তৈরী করা খসড়ায় চারটি বিষয় অন্তভূক্ত করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ বিনিময়, সার্কে জ্বালানি বানিজ্য, একে অন্যের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিনিময় এবং আইন বা নীতিগতভাবে এক অবস্থানে পৌছানো। বৈঠকে সার্কের আটটি দেশের প্রতিনিধি উপস্থিত থেকে এই খসড়া তৈরী করেছেন। আজ সর্বসম্মতিতে এই খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানা গেছে। এটি এনার্জি রেগুলেটরদের প্রথম বৈঠক।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, একে অন্যের সহায়তার জন্য বিদ্যুতের বাজার তৈরী করতে হবে। একটি নিদিষ্ট নিয়মে বিদ্যুতের বাজার তৈরী করতে পারলে এই অঞ্চলের প্রত্যেক দেশের লাভ হবে। এক দেশে যেমন বাজার আছে অন্য দেশে তেমনই আছে উৎপাদন করার ক্ষমতা। প্রত্যেক দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে সার্ক দেশে বিদ্যুতের বাজার তৈরী জরুরী।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব আবুবকর সিদ্দিক-এর সভাপতিত্বে বৈঠকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ আর খান, বিইআরসি’র সদস্য সেলিম মাহমুদ, নেপালের বাংলাদেশের চার্জ দ্যা এ্যাফেয়ার্স হ্যারি কুমার শ্রেষ্ঠ, মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাই কমিশনার মোহাম্মদ থাহিন, ভারতের বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সেক্রেটারি অরুনধুতি দাস, ভূটান ইলেকট্রিসিটি অথরিটির প্রিন্সিপাল ইঞ্চিনিয়ার এম দর্জি, আফগানিস্তানের ডেপুটি হেড অব মিশন আব্দুল কাউয়ুম, শ্রীলংকার পাবলিক ইউটিলিটি কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান সঞ্জয় গোমেজ, মালদ্বীপের বাংলাদেশ হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি মোহাম্মদ তাহসেন, পাকিস্তানের যুগ্ম সচিব খোকন মুর্তজা এবং সার্ব সেক্রেটারিয়েটের পরিচালক মো. ইব্রাহিম গাফরিসহ সার্কভূক্ত দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সার্ক অঞ্চলে সুষম উন্নয়নের জন্য পারস্পানরক জ্বালানি সহযোগিতা অপরিহার্য। এ অঞ্চলের দেশগুলোকে নিয়ে ‘জ্বালানি বলয়’ তৈরীর চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি আঞ্চলিক জ্বালানি বাজার তৈরী এবং তা বাড়ানোর জন্য জ্বালানি সংরক্ষণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়ানো, জল বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য ও বিকল্প জ্বালানি উন্নয়নের উপর গুরুত দেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্কভুক্ত দেশে জ্বালানি ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এতে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেবে। তিনি বলেন, আঞ্চলিক বিদ্যুৎ সরবরাহ সহযোগিতার ফলে উভয় দেশের আন্তঃসীমানা অবকাঠামো ব্যবহার, আঞ্চলিক বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং আঞ্চলিক বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে। যা বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ বাড়াবে। তাছাড়া ভবিষ্যতে আঞ্চলিক বিদ্যুৎ খাত সহযোগিতায় দক্ষিণ এশিয়ার জলবিদ্যুৎ উৎপাদন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।
জ্বালানি সচিব আবুবকর সিদ্দিক বলেন, নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে।
বৈঠকে জানানো হয়, ভূটান ছাড়া অন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বিদ্যুতর ঘাটতি আছে। এরমধ্যে নেপালে সর্বোচ্চ ৪৪ শতাংশ বিদ্যুৎ ঘাটতি। এ অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ আছে। দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে দ্বিপাক্ষিক বিদ্যুৎ সরবরাহ ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে এ অঞ্চলে একটি আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বাজার গড়ে তোলার উজ্জল সম্ভাবনা আছে।