২৫০ টাকার গ্যাস কিনছে ৪৫০ টাকায়
আবাসিক গ্রাহকরা মাসে ২৫০ টাকা সমপরিমান গ্যাস ব্যবহার করে। কিন্তু শোধ করে ৪৫০ টাকা। যার কারণে আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোও লাভ করছে। ফলে গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়।
গ্যাস ও বিদ্যুতের গণশানানী শেষে ভোক্তাদের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিইআরসি মিলনায়তনে সকল গ্যাস বিতরণ কোম্পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানী শেষ হয়েছে। এরআগে শেষ হয়েছে সকল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির শুনানী।
শুনানীতে বলা হয়, গ্যাস বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে গ্রাহকদের বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। গ্যাস ও বিদ্যুতের গ্রাহকদের মধ্যে বৈষম্য আছে। কেউ কম দামে, কেউ বেশি দামে গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে এই বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে।
শুনানীতে বিদ্যুতের মত গ্যাসেরও অস্বচ্ছল গ্রাহকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখার দাবি জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, শহরে দাম বাড়িয়ে সেই অর্থ নিয়ে গ্রামে ভর্তূকি দেয়া যেতে পারে। গ্যাস বিক্রি করে প্রায় সকল বিতরণ কোম্পানি লাভ করছে। বিদ্যুৎ বিতরন কোম্পানিগুলো লাভ না করলেও লোকসান করছে না। তারা ভবিষ্যৎ প্রয়োজন মেটাতে এখনই দাম বাড়াতে চাইছে। যেহেতু প্রায় সকল কোম্পানি লাভ করছে সে জন্য এই সময় আর বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রয়োজন। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার সুফল গ্রাহককে না দিতে পারলেও গ্যাস বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে মানুষেকে সেই সুফল দেয়া যেতে পারে।
শুনানী শেষে বিইআরসি চেয়ারম্যান এ আর খান বলেন, সকল বিষয় বিচার বিবেচনা করে স্বচ্ছতার সাথে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সিদ্ধান্ত নিতে ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করা হবে।
বৃহষ্পতিবার জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (জেজিটিডিএসএল) এবং সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড এর শুনানী হয়েছে।
জালালাবাদ এর প্রস্তাব পর্যালোচনা করে বিইআরসি কারিগরি কমিটি বলেছে, সঞ্চালন খরচ যদি প্রতিঘনমিটারে ১৩ পয়সা বাড়ানো হয় তবে চার দশমিক ৯৮ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রয়োজন হবে। প্রতিঘনমিটার ৩৪ পয়সা থাকলেই ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আয় হবে। বর্তমানে প্রতিঘনমিটার গ্যাস বিতরণ করে জেজিটিডিএসএল ৭৫ পয়সা লাভ করছে। এরমধ্যে ৩৭ পয়সা লাভ হয় বিতরণ থেকে আর বাকী ৩৮ পয়সা লাভ হয় পরিচালনা, সুদ ও অন্য আয় থেকে। জালালাবাদ ৪০ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল।
সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির গ্রাহক কম এবং এখনও পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু হয়নি বলে এখন শুধু পরিচালনা খরচ হচ্ছে। বর্তমানে যে দাম ধরা আছে তাতে ভবিষ্যতে লাভ হবে। চলতি অর্থবছরে প্রতিঘনমিটারে খরচ হচ্ছে ৮৮ পয়সা। কিন্তু গ্রাহক ও কার্যক্রম বাড়লে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই খরচ কমে হবে ৩৩ পয়সা। তখন লাভ না হলেও লোকসান হবে না।
বিইআরসি চেয়ারম্যান এ আর খান, সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন, রহমান মুরশেদ ও মাকসুদুল হক শুনানি পরিচালনা করেন।
বিশেষজ্ঞদের পক্ষে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক নুরুল ইসলাম আবাসিক গ্রাহকদের গ্যাসের দাম বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, শহরাঞ্চলে আবাসিক গ্যাসের দাম একচুলা এক হাজার টাকা এবং দুই চুলা এক হাজার ৫০০ টাকা করা উচিত। একই সাথে বাড়তি নেয়া অর্থ মফস্বলে যারা বোতল গ্যাস ব্যবহার করে তাদের জন্য প্রণদোনা হিসেবে দেয়া উচিত। গ্যাস কোম্পানিগুলো সব ভুল প্রস্তাব দিয়েছে বলে তিনি জানান। ক্যাব এর উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ালে সরকার আরও বেকায়দায় পড়বে।
বাসার
শ্বন্ধ: ৪৬৫