ছয়মাস বন্ধ খুলনার সৌর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

শিক্ষার্থীর অভাবে গত ৬ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের একমাত্র সোলার ট্রেনিং সেন্টার। খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় সেন্টারটি অবস্থিত। ২০০৭ সালে ‘প্রোমোশন অব রিনিউয়্যাবল এনার্জি ইন খুলনা ডিভিশন’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় এক কোটি ১০ লাখ টাকা দিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়। দেশের মানুষকে সোলার প্যানেল সম্পর্কে সচেতন করতে জার্মানি ও ইউরোপীয় একাডেমি, ইতালি এই প্রকল্পে অর্থায়ন করেছিল। বর্তমানে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সেন্টারটি পরিচালনা করছে।
২০০৭ সালে তৎকালীন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইকবালের তত্ত্বাবধানে সোলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। খুলনার ছেলে জার্মানির ব্রিমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিভূতি রায়ের চেষ্টায় জার্মানি ও ইউরোপীয় একাডেমি এতে অর্থায়ন করে। দেশের প্রথম এবং একমাত্র সরকারি সোলার ট্রেনিং সেন্টার এটি। প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে সোলার ট্রেনিং সেন্টারের ছাদে স্থাপন করা ২০ কিলোওয়াটের সোলার প্যানেলও ছিল দেশের সবচেয়ে বড় সোলার প্যানেল। অবশ্য পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২১ কিলোওয়াটের সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়।
সোলার ট্রেনিং সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক ও কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ হোসেন শেখ জানান, প্রথম দিকে সোলার প্যানেল বিষয়ে সরকারের বাধ্যবাধকতার কারণে এই খাতে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। তখন এখানে ট্রেনিং নিয়ে সবাই ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছে। কিন্তু ২০১২ সালের পর থেকে এই সেক্টরে চাকরির সুযোগ কমে যায়।
তিনি বলেন, চাকরির সুযোগ না থাকায় এখানে কেউ এখন আর প্রশিক্ষণ নিতে আসে না। চিঠি লেখার পর খুলনার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি ব্যাচ এখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। এ ছাড়া ইটকলের তিনটি ব্যাচ এখানে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। কিন্তু আগের মতো সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে আসে না। শিক্ষার্থী সংকটের কারণে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসের পর আর কোনো প্রশিক্ষণ হয়নি। তবে এ মাসেই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি ব্যাচ প্রশিক্ষণ নিতে আসবে।
২০১১ সাল পর্যন্ত প্রকল্প আওতায় ৭টি ব্যাচে প্রায় ২২৫ শিক্ষার্থী সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। দেশে সোলার প্যানেল বিক্রয় ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ কর্মকর্তা এই ট্রেনিং সেন্টারের ছাত্র। ২০১১ সালে কেসিসির কাছে প্রকল্প হস্তান্তরের পরে আরও ৭টি ব্যাচকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তখন থেকেই ধীরে ধীরে ছাত্র কমতে থাকে। ২০১৩ সালে যা শূন্যের কোটায় নেমে দাঁড়ায়।