অনুমোদন ছাড়া পুকুর-খাল-বিল ভরাট নয়
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়া পুকুর, ডোবা, খাল-বিল, নদী, কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক পানিরস্থান ভরাট করা যাবে না। তা সে সরকারি হোক কিম্বা বেসরকারি।
জাতীয় পরিবেশ কমিটির ১৫তম সভায় (১৮ই ফেব্রুয়ারি) এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পুকুর, ডোবা, খাল-বিল, নদী, কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক পানিরস্থান ভরাট বা শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। জাতীয় স্বার্থে ভরাট করার প্রয়োজন হলে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন নিতে হবে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থার আওতাধীন প্রাকৃতিক পানিরস্থান ও পুকুর বাধ্যতামূলকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং উন্নয়ন পরিকল্পনায় যেকোনো ভরাট কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।
ছিদ্রযুক্ত ইট তৈরি এবং বিভিন্ন ব্লক উৎপাদন ও ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বাধ্যতামূলক করার সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠকে ব্লক ইট তৈরিতে শুল্ক কমানো, সরকারি প্রণোদনা দেয়া, সরকারি প্রকল্পে ব্লক ইট ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে তদারকি কমিটি গঠন করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এখন থেকে নির্মাণ কাজের দরপত্রে বায়ু দূষণ রোধে স্পষ্টভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম চিহ্নিত করতে হবে। কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদফতরের পাশাপাশি বিআরটিএ এবং পুলিশের দৃশ্যমান কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয়ার ক্ষেত্রে গাড়ির কালো ধোঁয়া নির্গমণ পরীক্ষা করতে হবে। নিয়মিতভাবে পর্যাযক্রমে ফিটনেসবিহীন যানবাহন রাস্তা থেকে তুলে নিতে হবে।
জাতীয় পরিবেশ নীতি ২০১৮ এর ১৫টি বিষয় ছাড়াও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ, পাহাড়, প্রতিবেশ, জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ এবং জীবনিরাপত্তা, প্রতিবেশবান্ধব পর্যটন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা প্রস্তুতি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবস্থাপনা, অন্যান্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক উন্নয়ন, টেকসই উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ নীতিতে চিহ্নিত বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাসমূহ তাদের স্ব-স্ব কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেবে।
হাসপাতাল বা ক্লিনিকে পরিবেশবান্ধব ইনসিনারেটর, ইটিপি ইত্যাদি স্থাপন করতে সভায় নির্দেশনা দেয়া হয়।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানান, জাতীয় স্বার্থে পাহাড় কাটা প্রয়োজন হলে বাধ্যতামূলকভাবে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন নিতে হবে। পাহাড় কাটার কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট প্রত্যাশি সংস্থা থেকে কঠোরভাবে তদারকি করা হবে। অবৈধভাবে পাহাড় কাটার জন্য দ্রুতবিচার ট্রাইবুনাল গঠন করা যেতে পারে। পলিথিন ব্যাগের বিকল্প হিসেবে জৈবপচনশীল ব্যাগের ব্যবহারে প্রণোদনা দেয়া হবে। শিল্পে একবার ব্যবহার করা যায় এমন প্লাস্টিক ব্যবহারেও প্রণোদনা দেয়া হবে।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেছেন, পরিবেশ সুরক্ষায় সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ। যেকোনো মূল্যেই দেশের পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার উপস্থিাত ছিলেন।