অবশেষে বিদ্যুতের দাম বাড়লো: মধ্যবিত্তের বাড়বে দ্বিগুণ

অবশেষে বিদ্যুতের দাম আবার বাড়লো। গড়ে ইউনিট প্রতি ৩৫ পয়সা বা পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ হাওে দাম বেড়েছে। ডিসেম্বর থেকে এই দাম কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আজ বৃহষ্পতিবার রাজধানীর নিজ কার্যালয়ে নতুন দাম ঘোষণা করে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী গত সপ্তাহেই বলেছিল সরকার চাইছে না বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
মধ্যবিত্ত গ্রাহকদের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। মধ্যম গ্রাহকদেও আবার কোন ধাপ রাখা হয়নি। মাসে ৫০ টাকা ডিমান্ড চার্জ। এছাড়া যতটা বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে ততটা দাম দিতে হবে। আর এই দাম প্রতি ইউনিট গড়ে আট টাকা। আগে যা ছিল গড়ে পাঁচ টাকা।
এবার বিদ্যুতের ন্যুনতম চার্জ তুলে দেয়া হয়েছে। ফলে একেবারে কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের দাম বাড়বে না, কোন কোন ক্ষেত্রে একটু কমতে পারে। অর্থাৎ যতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে শুধু ততটুকুর দাম দিতে হবে। এতে বিশেষ করে গ্রামের কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী গ্রাহকদের দামের কোন পরিবর্তন হবে না। আগে ন্যুনতম ১০০ টাকা বিল ছিল। কিন্তু এখন যত ইউনিট ব্যবহার করবে তত দিতে হবে।
এবার প্রথম বিতরণ লাইন ভেদে দামের পার্থক্য করা হয়েছে। যারা উচ্চক্ষমতার লাইন থেকে বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তাদের দাম বেশি বাড়ানো হয়েছে। আর যারা কম ক্ষমতার বিতরণ লাইন থেকে বিদ্যূৎ ব্যবহার করে তাদের তুলনামূলক কম বেড়েছে। আবার উচ্চ ক্ষমতার বিতরণ লাইন থেকে যারা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তাদের লাইফ লাইন বা কমমূল্যের বিদ্যুৎ দেয়া হবে না। তাদের কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও উচ্চহারেই শোধ করতে হবে।
নতুন দাম অনুযায়ি আবাসিক গ্রাহকদের যারা ৫০ ইউনিটের কম ব্যবহার করলে তাদের প্রতি ইউনিট দাম পড়বে তিন টাকা ৫০ পয়সা। এরপর ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত চার টাকা। ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত পাঁচ টাকা ৪৫ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত পাঁচ টাকা ৭০ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত ছয় টাকা দুই পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিট পর্যন্ত নয় টাকা ৩০ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহার করলে ১০ টাকা ৭০ পয়সা করে দিতে হবে। সব গ্রাহককে এর সাথে ২৫ টাকা করে ডিমান্ড চার্জ দিতে হবে। এটা কম ক্ষমতার ২৩০ ভোল্ট বিতরণ লাইন থেকে বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে হবে। অর্থাৎ সাড়ে সাত কিলোওয়াট থেকে ৫০ কিলোওয়াট পর্যন্ত যাদের অনুমোতি নেয়া তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য।
বিদ্যুতের লোড যাদের ৫০ কিলোওয়াট থেকে পাঁচ মেগাওয়াট পর্যন্ত অর্ধাৎ মধ্যচাপের ১১ কেভি বিতরণ লাইন থেকে সংযোগ নেয়া গ্রাহকদের আবাসিকে প্রতি ইউনিট দাম পড়বে গড়ে আট টাকা। সর্বোচ্চ চাহিদার সময় (বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা) ১০ টাকা এবং অল্প চাহিদার সময় (রাত ১১টা থেকে বিকাল ৫টা) সাত টাকা ২০ পয়সা। মধ্যবিত্ত বেশিরভাগ গ্রাহক এই সংযোগ নিয়ের থাকে।
বিদ্যুতের নতুন দাম ঘোষনা করেন বিইআরসি চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম। এসময় অন্য সদস্য মিজানুর রহমান, আব্দুল আজিজ খান, রহমান মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আগামী ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল।