অবিলম্বে ভারতীয় আন্তঃ নদী সংযোগ প্রকল্প বাতিল করতে হবে: বাপা
কেন-বেতওয়া নদী সংযোগসহ ভারতীয় আন্তঃ নদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অর্থনৈতিক, পরিবেশগত, আইনগত ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।অবিলম্বে এই প্রকল্প বন্ধ করার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারকে এই বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)।
গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি হল কক্ষে (সেগুনবাগিচা, ঢাকা) “ভারতীয় আন্তঃ নদী সংযোগ প্রকল্পের প্রথম সংযোগ ও বাংলাদেশের উপর তার প্রভাব’’ শীর্ষক এক সংবাদিক সম্মেলনের এ আহ্বান জানানো হয়।সম্মেলনে মুল বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার লকহ্যাভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদ ও পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান।অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন, বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম।
ড. খালেকুজ্জামান বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশের ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকলেও বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে ভারত সরকার এককভাবে এ প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে।এটি বাংলাদেশের সঙ্গে অভিন্ন নদীগুলোর সংযোগ প্রকল্প বিষয়ে আলোচনা করার ভারতীয় সরকারের করা পূর্ববর্তী অঙ্গীকারের বরখেলাফ।তিনি জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে‘কেন নদী’র উপ-অববাহিকা থেকে‘বেতওয়া নদী’র উপ-অববাহিকায় উত্তোলন করা পানির সবটাই স্থানীয় বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহূত হবে।এতে বাংলাদেশের পদ্মা নদীর পানির পরিমান কমে যাবে।ফলে ফারাক্কা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি ও তলানীর পরিমানও কমবে।বাংলাদেশের সার্বিক প্রকৃতি বিশেষ করে সুন্দরবনের মারাত্মক ক্ষতি করবে।উপকুলীয় নদীগুলোর লবনাক্ততা বৃদ্ধি পাবে, নদীগুলোতে পলি জমার পরিমাণও কমবে, নৌ পথ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে মত্স সম্পদ।সর্বপরি ধ্বংস হবে বাংলাদেশের অর্থনীতি।তিনি বলেন, এই প্রকল্পে কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের নয়টি রাজ্যের নদীর পানি কমে যাবে।ভারত সরকার সমপ্রতি এই প্রকল্পের প্রথম সংযোগ‘কেন-বেতওয়া সংযোগ’ কার্যক্রমটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলেও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় তা আপাতত বন্ধ রেখেছে।কিন্তু নির্বাচনের পর যেকোনো সময় এই কার্যক্রম শুরু হতে পারে।ফলে বাংলাদেশ সরকারের উচিত এ বিষয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা এবং অবিলম্বের এই প্রকল্প বন্ধের আহ্বান জানানো।
অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম বলেন, এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে ভারত সরকার আন্তর্জাতিক নদী ও পরিবেশ নীতি, ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘ ঘোষিত ওয়াটার কোর্স কনভেনশন, প্রাণ বৈচিত্র সংরক্ষণ-জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমণ-আন্তর্জাতিক জলাভূমি নীতিমালাকে উপেক্ষা করছে।এতে বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত গঙ্গার পানিবন্টন চুক্তির ৯ (ক) ধারাটিও লংঘিত হচ্ছে।