আজ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস: কমে যাচ্ছে ঋতুর বৈচিত্র
তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। শীতকালে কম শীত। বৈশাখের আগেই কালবৈশাখী ঝড়। বর্ষার আগেই হচ্ছে বৃষ্টি। এতে বালাদেশে ছয় ঋতুর বৈচিত্র কমে যাচ্ছে। শরৎ, হেমন্ত আর বসন্তের অনাবিল আবহাওয়ার দেখা পাওয়াই এখন মুসকিল।
আবহাওয়াবিদদের আশংকা, বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে আগামী ৫০ থেকে ৬০ বছরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা ৫ থেকে ৬ ডিগ্রি বাড়বে। এখনই ঋতুগুলো ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিকতা হারাতে শুরু করেছে।
এমনই পরিস্থিতিতে পালিত হচ্ছে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস। প্রতিবছর এই দিনে বাংলাদেশসহ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ১৯১টি সদস্য দেশ ও স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল ২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস পালন করে আসছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, প্রতিবছরের মতো চলতি বছরও দিবসটি পালনের জন্য নানা কর্মসূচি পালন করা হবে।
ঋতু পরিবর্তনের বিষয়ে আবহাওয়াবিদ শাহ আলম বলেন, তিন ঋতু অন্য তিন ঋতুর মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে। ছয় ঋতুর স্বাভাবিক চক্রে কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে পরিবর্তন। সময়ের আগেই শীতের বিদায় আর অসময়ে ঝড়-বৃষ্টিকে জলবায়ু পরিবর্তনেরই ফল। এই পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে মানুষকেও খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
সম্প্রতি আমেরিকার ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফোরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ১৯৫০ সালের পর এবারের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করা হচ্ছে। যে কারণে ডিসেম্বর মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। এ হিসেবে গত ৬৬ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় এল নিনোর (জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব) জন্য এবার শীতকাল অপেক্ষা উষ্ণই ছিল বাংলাদেশে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি ছিলো উল্টো। মার্চ মাসেও ওইসব এলাকায় বরফ পড়েছে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ছিল অনেকদিন।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, প্রায় প্রতি আট থেকে ১২ বছর পর পর আবহাওয়া বদলে যায়। ১৯৯৮ সালের বন্যার পর ২০০৪ সালের বন্যা। ২০০৩ সালের তীব্র শৈত্যপ্রবাহের পর আর তীব্র শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়নি। এল নিনোর প্রভাবে বিশ্বের অনেক স্থানে ২০১৬ সাল শুরু হয়েছে আবহাওয়ার অ¯স্বাভাবিক আচরণ দিয়ে। একই কারণে ২০১৬ সাল ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। এ বছরও এর প্রভাব অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে। উষ্ণতম বছর হিসেবে রেকর্ড গড়েছে ২০১৬ সাল। বিশ্বের অনেক এলাকার মতো ২০১৭ সালে বাংলাদেশেও বাড়তি তাপমাত্রা লক্ষ্য করা যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই কারণে বৃষ্টির পরিমাণও বেশি হওয়ার আশংকা করছেন তারা।