আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম দেড় মাস ধরে কমছেই
ইবি ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমা অব্যাহত আছে। করোনার নতুন ওমিক্রন আসায় দাম আরও কমবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গত সপ্তাহে একদিনেই জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি কমেছে প্রায় ১০ মার্কিন ডলার। প্রায় দেড় মাস ধরে টানা দাম কমছেই।
নতুন বছরের শুরুতে বিশ্ববাজারে দৈনিক আরও চার লাখ ব্যারেল তেল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে ওপেক ও তার মিত্ররা। করোনার সাথে এই ঘোষণাও দাম কমতে প্রভাব ফেলেছে।
বিশ্ববাজারে ডব্লিউটিআই তেল প্রতিব্যারেল বিক্রি হচ্ছে ৬৬ দশমিক ২৬ ডলারে। অপরিশোধিত তেল কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৯ দশমিক ৮৮ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।
করোনার মধ্যে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকেই অল্প অল্প বাড়তে থাকে তেলের দাম। ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর চলতি বছর জুনে অপরিশোধিত তেল ব্যারেলপ্রতি হয় ৭৫ ডলার। অক্টোবরে এসে সেই দাম ৮৫ ডলারে পৌঁছায়। যা ছিল গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আর তখনই বাংলাদেশে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। যদিও এখন কমলেও দাম কমানোর কথা আলোচনায় নেই। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এখনও স্থিতিশীল হয়নি তেলের বাজার। আরও পর্যবেক্ষণ শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর কথাও একই। পর্যবেক্ষণ করছি। আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে কমানো হবে।
করোনার পর ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতি সচল রাখতে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগি হয় কয়েকটি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, রাশিয়া চীন, ভারত উদ্যোগ নেয়। মজুদ থেকে এসব দেশ বাজারে তেল ছাড়ার ঘোষণা দেয়। একই সাথে যোগ হয়েছে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন। এই দুই মিলে কমছে জ্বালানি তেলের দাম।
মার্কিন জ্বালানি খাতের গবেষণা সংস্থা এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) এর দেয়া তথ্য অনুযায়ি, আসছে নতুন বছরে তেল গ্যাসের দাম আরও কমবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন বাড়বে। এতে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তাতে দাম আর বাড়বে না। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটস-ও জানিয়েছে, আগামী বছরের প্রথমে চাহিদা প্রতিদিন ১৬ লাখ ব্যারেল করে কমবে। এতে দামও কমতে পারে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি গবেষণা সংস্থা এনার্জি ইন্টেলিজেন্সের তথ্যানুযায়ী, খোলা বাজার বা প্রতিযোগিতার বাজারে বর্তমানে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি বিক্রি হচ্ছে ৩৪ ডলার। এর আগে অক্টোবরে ৫৬ ডলারে উঠে যায়। যদিও পরে তা ৩৫ ডলারে নেমে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গ্যাসের দাম আগের অবস্থায় ফিরে গেলে এশিয়ায়ও প্রভাব পড়বে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি নির্ভরতার কারণে আন্তর্জাতিক বাজার অনুসরণ করতে হচ্ছে। গ্যাসের দাম কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে হবে। আর দাম কম থাকলে মজুদ বাড়াতে হবে। জ্বালানি তেলের মজুদ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। অন্তত দুই মাসের মজুদ সক্ষমতা বাড়ানো গেলে দেশে জ্বালানি তেলের দামে অস্থিতিশীলতা কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।