আন্তর্জাতিক বাজারে ফের বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম
আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যাংকগুলো সুদহার আবারো বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন অনেক ব্যবসায়ী। এর পরও দাম বাড়ার কারণ সরবরাহ সংকুচিত হয়ে ওঠার পাশাপাশি চীনে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির প্রত্যাশা। খবর রয়টার্স।
আইসিই ফিউচারসে গতকাল অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম ৪৪ সেন্ট বা দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৮১ ডলার ৫১ সেন্ট। অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৪৪ সেন্ট বা দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭৭ ডলার ৫১ সেন্টে।
সপ্তাহের হিসাবে ব্রেন্টের দাম ১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআইর দাম ২ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। এ নিয়ে টানা চার সপ্তাহ উভয় বাজার আদর্শের দাম বাড়ল। ওপেক প্লাসের উত্তোলন কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে জ্বালানি তেল সরবরাহ সংকুচিত হয়ে আসছে। এ কারণেই দাম বাড়ছে।
এদিকে ইউক্রেনের সঙ্গে করা কৃষ্ণ সাগরীয় খাদ্যশস্য চুক্তি থেকে রাশিয়া সরে আসার পর উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধ আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিষয়টিও জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক সরবরাহ ধারাকে ব্যাহত করছে বলে জানান বিশ্লেষকরা।
এদিকে চলতি বছরের জন্য অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস বাড়িয়েছে রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক। অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে পড়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও আগামী বছরের চাহিদা নিয়ে আশাবাদী জোটটি। কারণ চীন ও ভারত অব্যাহত জ্বালানির ব্যবহার বাড়াচ্ছে।
মাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে ওপেক জানায়, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ২৪ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল করে বাড়তে পারে। আগামী বছর চাহিদা প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে দৈনিক ২২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থাও আগামী বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে সংস্থাটির পূর্বাভাসের তুলনায় ওপেক প্লাসের পূর্বাভাস দ্বিগুণ বেশি।
জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ার পূর্বাভাস আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্যদিকে ওপেক ও এর মিত্র জোট ওপেক প্লাসের উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তও বাজারকে চাঙ্গা করে তুলছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে জোটটি গত জুন থেকে আরো ব্যাপক মাত্রায় উত্তোলন কমার পদক্ষেপ হাতে নেয়।
ওপেকের প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, জোটটির আগাম পদক্ষেপ এবং উত্তোলন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত বাজারে স্থিতি ফিরিয়েছে। আগামী বছর পর্যন্ত এ স্থিতিশীল অবস্থা বজায় থাকবে। ২০২৪ সালে চীনের অর্থনীতিতে গতি ফিরবে। ফলে লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধি আসবে বিশ্ব অর্থনীতিতেও। বিষয়টি জ্বালানি তেলের ব্যবহার বাড়াতে সহায়তা করবে।
– বণিক বার্তা