আমদানি করা গ্যাসে রমজানে লোডশেডিং না করার উদ্যোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসন্ন রমজানে গ্যাস সরবরাহ বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ কোটি ঘনফুট বাড়তি গ্যাস সরবরাহ করা হবে। গ্যাস আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে সম্মত হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বুধবার বিদ্যুৎ ভবনে আসন্ন রোজার মাস, সেচ মৌসুম ও গরমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভাশেষে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সাংবাদিকদের একথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, রমজান মাস লোডশেডিং মুক্ত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কারিগরি কারণ ছাড়া লোডশেডিং যাতে না হয় সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা ১৫ হাজার ৭শ’ মেগাওয়াট হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, রমজান ও গ্রীষ্ম মৌসুমে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। রমজান মাসে যে পরিমাণ জ্বালানি প্রয়োজন হবে, তার জন্য সে পরিমাণ টাকা ও ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। রমজান মাসে ১২০ কোটি ঘনফুট দেওয়া হবে। আর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ১১০ কোটি। রমজানে বাড়তি ৪ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে।
আসন্ন গরমের মৌসুমে ৭শ’ থেকে ১ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুতের লোডশেডিং হতে পারে বলে আভাস দেন উপদেষ্টা। ওই সময়ে সারাদেশের এসি ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে রাখা গেলে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তিনি।
এবার গরমের সময় সর্বোচ্চ ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
লোডশেডিং কমাতে এসিগুলো ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখার পরামর্শ দেন উপদেষ্টা। এতে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় সম্ভব বলে তিনি জানান।
প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছি না। অনেক চাপ থাকার পরও আমরা দাম বাড়াইনি। গ্যাসের দাম নতুন শিল্পে বাড়বে, বিদ্যমান শিল্পে আগের দর থাকবে।
উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের কাছে বিভিন্ন দেশীয় ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পাওনা রয়েছে। অনেকেই তাগাদা দিয়ে যাচ্ছেন। কতদিনের মধ্যে বকেয়া পুরোপুরি পরিশোধ হবে এ কথা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান, বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসানসহ বিভিন্ন সংস্থা ও কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় গরমের জন্য কিছু নির্দেশনা বা পরামর্শ দেওয়া হয়।
এরমধ্যে রয়েছে- পিক আওয়ারে সেচ পাম্প বন্ধ রাখা, রাত ১১টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সেচ পাম্প চালাতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা, ইফতার, সেহরি ও তারাবির নামাজের সময় লোডশেডিং না করা, মসজিদগুলোর এসি ২৫ ডিগ্রির নিচে না নামানো, ওভারলোডেড ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন করা।