আমদানি, মজুদ ও সরবরাহ চক্রাকার প্রক্রিয়া: বিপিসির চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বালাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেছেন, এটা একটা প্রক্রিয়া। একটা সার্কেল। একদিনের মজুদ তথ্য নিয়ে বিবেচনা করা যাবে না। প্রতিনিয়ত মজুদ পরিস্থিতি পরিবর্তন হচ্ছে। এই নিয়মেই দীর্ঘদিন জ্বালানি তেল সরবরাহ হয়ে আসছে। এতে এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা হয়নি। আজকে কমে যাচ্ছে আবার কালকেই বেড়ে যাচ্ছে। সব সময় আছেই। দেশে জ্বালানির কোনও সংকট নেই।
বুধবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, এখানে আমরা হয়তো হঠাৎ করে কারও কাছে শুনতে পারি যে, তেল ৮ দিন বা ৯ দিনের হয়ে গেছে। জ্বালানি তেলের মজুদ নিয়ে এইটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। যাদের এই বিষয় সম্পর্কে ধারণা কম, পুরো ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা কম তারা হয়তো এটি বলতে পারে। কিন্তু এটাই প্রক্রিয়া। দীর্ঘদিন এভাবেই হয়ে আসছে। কখনও সমস্যা হয়নি। আগামী ৬ মাসের তেল আমদানির শিডিউল নিশ্চিত আছে। বর্তমানে দেশে জ্বালানি তেলের কোনো ঘাটতি বা সংকট নেই। সংকটের কোনো আশঙ্কাও নেই।
দেশে এখনও ডিজেলের যে মজুদ আছে, তা দিয়ে ৩২ দিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব। পেট্রলের মজুদ ১৫ দিনের, অকটেনের ৯ দিনের, ফার্নেস অয়েল ৩২ দিনের, জেট ফুয়েল ৪৪ দিনের মজুদ আছে।
চেয়ারম্যান বলেন, আমদানি, মজুদ ও সরবরাহ একটি চক্রাকার প্রক্রিয়া। আজকে যে অকটেনের মজুদ ৯ দিনের, এক-দুই দিনের মধ্যে ৫০ হাজার মেট্রিক টন অকটেনবাহী একটি জাহাজ আসবে। তার পরে মজুদের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৮ দিনের। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। পেট্রোল শতভাগ দেশেই উৎপাদন হয়। এর সঙ্গে মজুদের কোনো সম্পর্ক নেই।
চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন ১৩ থেকে ১৪ হাজার মেট্রিকটন ডিজেল প্রয়োজন হয়। আমদানি করা ডিজেলের বড় অংশ পরিবহন খাত এবং কৃষিকাজে সেচের কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। বর্তমানে দেশে ডিজেল ৩১ হাজার ৮৩৫ মেট্রিকটন, অকটেন ১২ হাজার ২৩৮ মেট্রিকটন, পেট্রোল ২১ হাজার ৮৩৩ মেট্রিকটন, জেট ফুয়েল ৬২ হাজার ৮৯১ মেট্রিকটন এবং ফার্নেস অয়েল ৮৫ হাজার ৪১ মেট্রিকটন মজুদ আছে। যদি ধরে নেই, বিপিসি আর তেল আমদানি করলো না, তাহলে ডিজেল দিয়ে চলবে ৩২ দিন, অকটেন দিয়ে ৯ দিন, পেট্রোল ১৫ দিন, জেট ফুয়েল দিয়ে ৪৪ দিন আর ফার্নেস অয়েল দিয়ে চলবে ৪৪ দিন। কিন্তু বিপিসি কি আমদানি আজ বন্ধ করে দেবে? কখনোই আমদানি বন্ধ করবে না। আগামী এক থেকে দুই দিনের ভেতর আরও ৫০ হাজার মেট্রিকটন অকটেন আসবে। সেই সঙ্গে দুই দিনের ভেতর ৩০ হাজার মেট্রিকটন ডিজেলের একটি চালান আসছে।
সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রর জন্য চাহিদা অনুযায়ি বিপিসি ফার্নেস অয়েল আমদানি করলেও বেসরকারি উদ্যোক্তারা নিজেরা নিজেদের মত আমদানি করে বলে জানান তিনি।
পাম্পগুলোতে সরবরাহ কম দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত দেওয়ার সুযোগই নেই। আমাকে তো সরবরাহের গতিটা ধরে রাখতে হবে। যারা এটা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে।
সপ্তাহে একদিন বন্ধ পাম্প বন্ধ রাখার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি জানান। বলেন, এবিষয়ে আরও পর্যালোচনা হচ্ছে। বিস্তারিত পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।