দুর্নীতি না করার শপথ নিলেন আরইবি কর্মকর্তারা

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিভিন্ন কার্যক্রমে চলছে দূর্নীতি। আর তাই ভবিষ্যতে আর দুনীতি না করার শপথ নিলেন এর কর্মকর্তারা। সমস্বরে বললেন, আমরা আর দুর্র্নীতি করবনা। এই প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতি মুক্ত করব। যথাযথ বিদ্যুৎ সেবা দেব। গ্রাহককে হয়রানি করব না।
শনিবার সকালে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সকল সমিতির মহাব্যবস্থাপক এই শপথ নেন। আরইবি চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মঈন উদ্দীন শপথ পড়ান। আরইবির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত গ্রাহক হয়নারি ও দুনীতি প্রতিরোধমুলক আলোচনা সভায় এই শপথ নেন কর্মকর্তারা। পরে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দেশের সকল সমিতির মহাব্যবস্থাপকদের সাথে মত বিনিময় করেন। সেখানে তারা তাদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। প্রতিমন্ত্রী পর্যায়ক্রমে তা সমাধানের আশ্বাস দেন।
সমিতির কর্মকর্তারা দুনীতি রোধ করতে লাইনম্যান ও অন্য টেকনিশিয়ানদের বদলী করার প্রথা চালু করার দাবি জানান। এক স্থানে থেকে তারা দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়া সমিতিকে কোম্পানিতে রূপান্তর এবং নির্দিষ্ট ইলেকট্রিশিয়ান না রেখে উম্মুক্ত করে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, সকলকে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্য চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। কোন সরকার চাইনা তার একটি প্রতিষ্ঠান দুর্নতিগ্রস্ত হোক। আরইবির সকল কার্যক্রমকে আগামীতে দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে। দুনীতির সঙ্গে জড়িত হচ্ছে বলে যে অভিযোগ আছে তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। গ্রাহককে হয়রানি করা যাবে না। একে ঠেকাতে হবে। না হলে সব অর্জন ধুলিস্মাত হয়ে যাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি জিরো টলারেন্স সম্ভব নয়। পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রই পারেনি। তবে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব। যে দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে এটাকে রোধ করতে হবে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, রাজনৈতিক সরকারের সফলতা নির্ভর করছে আপনাদের উপর। আপনারাই পারেন সরকারের মুখ উজ্জল করতে। রাজনৈতিক সরকার দেশ পরিচালনা করে। এজন্য রাজনৈতিক চাপ থাকবে। সেই চাপ মোকাবেলা করতে হবে।
আরইবি চেয়ারম্যান মঈন উদ্দীন দুর্নীতির কথা স্বীকার করে বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে স্তরে স্তরে দুর্নীতি হচ্ছে। এতে আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় সমিতির উপদেষ্টা, পরিচালক ও লাইনম্যানরা বাড়ি গিয়ে সংযোগ দেয়ার কথা বলে টাকা নিচ্ছে। এর সাথে আরইবি কর্মকর্তারাও জড়িত। দুর্নীতি বন্ধে শপথ পাঠ করেছি। এই দুর্নীতি আর হতে দেয়া হবে না। এ জন্য মাইকিং করা হবে। পোষ্টার ছাপানো হবে, ডিস চ্যানেলে, পত্রিকা ও টিভির মাধ্যমে প্রচার করা হবে।
তিনি বলেন, যাদের সংযোগ প্রয়োজন তারা যেন আবেদন করেন। কাওকে কোন টাকা না দেন। মাথা ঠিক হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
সভায় লোডশেডিং কথা তুলে ধরে আরইবি চেয়ারম্যান বলেন, লোডশেডিং বেড়েছে। বিশেষ করে গতমাস ও চলতি মাসে। গত ১৭ জুনে আরইবিতে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে দুই হাজার ৫৬৪ মেগাওয়াট। এদিন চাহিদা ছিল তিন হাজার ৬৩৫ মেগাওয়াট।
সমিতির মহাব্যবস্থাপকরা বলেন, আমরা আবেদন নিয়ে অপেক্ষায় আছি। বিদ্যুৎ নেই বলে সংযোগ দিতে পারছি না। ঠিকমত এই রমজানেও ঠিকমত বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব হবে কিনা জানি না। কারণ চাহিদার চেয়ে অনেক কম বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। কিছু এলাকা আছে চাহিদার তুলনায় বিতরণ লাইন করা নেই। কিছু এলাকা আছে যেখানে যতটা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব তার থেকে বেশি গ্রাহককে সংযোগ দেয়া হয়েছে।