উন্নতদের প্রতিশ্রুতি লংঘন ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর বিপদ ঘনীভূত করছে: প্রধানমন্ত্রী
ইবি ডেস্ক/বাসস:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কার্বন নিঃসরণকারী গুরুত্বপূর্ণ উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুত তহবিল না দেয়ায় জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দরিদ্র দেশগুলোকে আরও অসহায় অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের ধ্বংসাত্মক পরিণতি মোকাবেলায় আমাদেরকে নিজেদের মতো করে পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক (কপ-২৬) সম্মেলনের পাশাপাশি ফোরামের সভাপতি হিসেবে ৪৮ জাতি সিভিএফ নেতাদের সংলাপে ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা এই পরিস্থিতিকে ‘দুঃখজনক এবং হতাশাব্যঞ্জক’ আখ্যায়িত করে বলেন, অদ্যাবধি গুরুত্বপূর্ণ গ্রীণহাউজ গ্যাস নিঃসরণকারী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুত বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘের মহাসচিব এন্টনিও গুতেরেসও সম্মেলনে ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম লিডার্স ডায়ালগ: ফোর্জিং এ সিভিএফ-কপ-২৬ ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট’ শীর্ষক সংলাপে ভাষণ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। তিনি গুরুত্বপূর্ণ কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোকে পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেন যে তাদের জন্যই ৪৮ জাতি সিভিএফ সদস্য দেশগুলোকে অতিরিক্ত ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিজেরাই নিজেদের মতো করে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে বাংলাদেশ ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ চালু করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কম কার্বন কৌশল’ অবলম্বনের মাধ্যমে আমাদের উন্নয়নের পথ নির্দেশনা দিতেই এই পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এমনিভাবে ৩৭ জন সিভিএফ সদস্যরা একইভাবে জলবায়ু সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য জলবায়ু সহিষ্ণুতার নিজস্ব পরিকল্পনা গড়ে তুলবে।
শেখ হাসিনা বলেন, পর্যাপ্ত, টেকসই ও সহজলভ্য জলবায়ু অর্থায়ন ছাড়া কার্যকর কর্মপরিকল্পনা সম্ভব নয়। তাই এটা দুঃখজনক এবং হতাশাজনক যে এখন পর্যন্ত প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুত বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সেই কারণেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হয়ে আমরা, সিভিএফ সদস্যরা, অর্থায়ন উন্নত দেশগুলোর কাছে ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই ৫ বছরের অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য ৫০ঃ ৫০ আনুপাতিক হারে প্রতিবছর মোট ৫০০ বিলিয়ন ডলারের একটি অর্থায়ন পরিকল্পনা দাবি করি।
প্রধানমন্ত্রী ও সিভিএফের চেয়ারম্যান, বলেন সিভিএফ একটি ‘জলবায়ু জরুরি চুক্তি’ নিয়ে এসেছে। এই চুক্তিটি জলবায়ু অর্থ সরবরাহ পরিকল্পনাকে সমর্থন করে। এটি তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নিয়ন্ত্রিত রাখার বিষয়টি ক্রমাগত অগ্রগতি নিশ্চিত করবে। আমরা কপ২৬-এর প্রেসিডেন্সী এবং ইউএনএফসিসিসি’র সকল সদস্যকে কপ২৬ ঘোষণাপত্রের অংশ হিসেবে জলবায়ু জরুরি চুক্তি গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।