উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনে উন্নয়ন হয় না: আনু মুহাম্মদ
তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেছেন, উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করা হলে সেখানে কোন উন্নয়ন হয় না, শুধু ধ্বংস হয়। বিশ্বের যেখানে উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দারা গরীব। এশিয়া এনার্জির কিছু মানুষ ফুলবাড়িতে এসে উন্নয়নের কথা বলছে। কিন্তু তারা নিজেরাই উম্মুক্ত কয়লাখনি এলাকায় যাননি।
গত শনিবার দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পৌর শহরের উত্তরা ব্যাংকের সামনে জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এক মত বিনিময় সভায় প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ফুলবাড়ী শাখার আহবায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক সামিয়া আক্তার মিত্রা, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, দিনাজপুর জেলা কমিটির আহবায়ক আলতাব হোসাইন, ফুলবাড়ী শাখার সদস্য সচিব জয়প্রকাশ নারায়ন প্রমুখ।
অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন এলাকার উম্মুক্ত ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে বহুদুর পর্যন্ত পানি নেই। পানির অভাবে সেখানকার মানুষ কোনো কাজই করতে পারছে না। পানি সংগ্রহেই তাদের সারাদিন যায়। তিনি বলেন, অন্যদেশের তুলনায় আমাদের দেশে উম্মুক্ত খনি হলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বেশি হবে। বেশিরভাগ জায়গায় মাটির নিচে কয়লার স্তর উপরে আর পানির স্তর নিচে, কিন্তু আমাদের দেশে পানির স্তর উপরে আর কয়লার স্তর নিচে। যার ফলে এই এলাকায় উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি করা হলে মাটির নিচের পানির ব্যাপক ক্ষতি হবে যা কোন ভাবে পুরণ করা সম্ভাব নয়। এছাড়া অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের খনিগুলো ঘন জনবসতিপুর্ণ এলাকায় অবস্থিত। তিনি ভারতের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানে খনি এলাকার মানুষের ক্ষতি হলেও সরকারে ও দেশের লাভ হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে কয়লা খনি করতে আগ্রহী বিদেশি কোম্পানিটি মানুষের পাশাপাশি দেশ ও জাতিরও ক্ষতি করবে। তাই বাংলাদেশে উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি করা একটি আÍঘাতি সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই নয় বলে তিনি জানান।
সভাশেষে ভারতের ঝাঁড়খন্ডে উম্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি হওয়ায় বর্তমানে সেখানকার মানুষের কিভাবে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে সে বিষয়ে একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।