উৎপাদনের অপেক্ষায় বিশ্বের প্রথম ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

World’s First FNPP Sets Sail To Supply Electricity

রাশিয়ায় তৈরী বিশ্বের প্রথম ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র একাডেমিক লামানোসভ শনিবার দেশটির দূরপ্রাচ্যে তার চুড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছেছে। চুকোতকা অঞ্চলে পেভেক শহরের কাছে নোঙর করা এই বিদ্যুৎকেন্দ্র চলতি বছরের শেষ দিকে উৎপাদনে যাবে। এটা হবে ক্ষুদ্র মডিউলার রিয়্যাক্টর (এসএমআর) প্রযুক্তি ভিত্তিক বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং দূরবর্তী অঞ্চলে নির্ভরযোগ্য লো-কার্বণ এনার্জি উৎসের প্রটোটাইপ। রুশ রাস্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন রসাটমের উদ্যোগে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হয়েছে।
রসাটমের প্রধান নির্বাহী আলেক্সি লিখাচোভ বলেন, আর্কটিক অঞ্চলের টেকসই উন্নয়নে এটা ক্ষুদ্র পদক্ষেপ হলেও দূরবর্তী অফ-গ্রীড অঞ্চলকে কার্বণ মুক্ত করতে বিশাল পদক্ষেপ এবং ক্ষুদ্র মডিউলার বিদ্যুৎকেন্দ্রের উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্বের অনেক বিজ্ঞানী, পারমাণবিক শক্তি বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদী।
ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার এসোসিয়েশনের মহাপরিচালক আগ্নেতা রাইজিং বলেন, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের মোট বিদ্যুতের ন্যূনতম ২৫ শতাংশ পারমাণবিক উৎস থেকে সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে আমাদেরকে পারমাণবিক শক্তির সুবিধা আরও বেশি এলাকা ও মানুষের মধ্যে বিস্তৃত করতে হবে। নতুন শ্রেণির ক্ষুদ্র, চলনশীল এবং বহুমূখী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম হচ্ছে একাডেমিক লামানোসভ। এটা নির্মল এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ, তাপ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।
রাশিয়ায় তৈরী ক্ষুদ্র মডিউলার রিয়্যাক্টর ভিত্তিক ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং স্থলবর্তি বিদ্যুৎ স্থাপনার পরীক্ষামূলক প্রকল্প এবং ‘ওয়ার্কিং প্রটোটাইপ হচ্ছে একাডেমিক লামানোসভ। রাশিয়ার দুর্গম উত্তর এবং দূরপ্রাচ্য অঞ্চলে এই ক্ষুদ্র বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ব্যবহার হবে এবং বিদেশেও রপ্তানি করা হবে।
রসাটমের মুখপাত্র পেভেক প্রকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর মোট ব্যয় সম্পর্কে কোন তথ্য প্রকাশ করা হবে না বলে জানান। তবে তিনি বলেন, এই প্রযুক্তি খুবই প্রতিযোগিতামূলক হবে। সিরিজ আকারে তৈরি হলে এসএমআর ভিত্তিক কেন্দ্রগুলো ডিজেলের তুলনায় সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। একই সঙ্গে ক্ষতিকর পদার্থের নিঃসরণ প্রতিরোধ করবে।
একাডেমিক লামানোসভে দুটো কেএলটি- ৪০সি রিয়্যাক্টর স্থাপন করা হয়েছে, যার প্রতিটার উৎপাদন ক্ষমতা ৩৫ মেগাওয়াট। ভাসমান স্থাপনা ১৪৪ মিটার দীর্ঘ এবং ৩০ মিটার প্রসস্ত। এর ডিসপ্লেসমেন্ট ২১ হাজার টন। অষ্টাদশ শতাব্দির খ্যাতিমান রুশ বিজ্ঞানী মিখাইল লামানোসভের নামানুসারে ভাসমান বিদ্যুৎকেন্দ্রর নামকরণ করা হয়েছে।