জ্বালানি তেলের দাম কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জ্বালানি তেলের দাম কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ মধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হবে।
সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠকেও তেলের দাম কমানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এক মাসের মধ্যে তেলের দাম কমানো হবে। বিশেষ করে ফার্নেস তেলের দাম। কতো কমানো হবে- সেটা যাচাই-বাছাই করে ঘোষণা দেয়া হবে।
অন্যান্য জ্বলানি তেলের দাম কমানো হবে কিনা- এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, শুধু ফার্নেস অয়েলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমেছে। এর সঙ্গে দেশের বাজারের তেলের দাম সমন্বয় করা হবে।
বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯ টাকা, পেট্রোল ৯৬ টাকা, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার ফার্নেস তেলের দাম ৬০ টাকা। আর বিপিসি লাভ করছে
বিশ্ববাজারে অব্যাহতভাবে তেলের দাম কমেছে। কিন্তু স্থানীয় বাজারে কমানো হয়নি। অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা সব পর্যায় থেকে এই অবস্থায় তেলের দাম কমানোর দাবি তুলেছে।
সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ি, সব কর ভ্যাট যোগ করে প্রতি লিটার ডিজেল আমদানিতে খরচ প্রায় ৪০ টাকা। বাজারে এই ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকায়। আমদানি করা তেল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে লিটার প্রতি অকটেনে ৪০ টাকা, পেট্রলে ৩৫ টাকা, ডিজেল ও কেরোসিনে ২০ টাকা ও ফার্নেস তেলে ১৫ টাকা লাভ হচ্ছে। তবে কর সুবিধা পাওয়ার কারণে বেসরকারিভাবে আমদানি করা জ্বালানি তেলের দাম কম পড়ছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থ বছর থেকে জ্বালানি তেল বিক্রিতে বিপিসি লাভ করছে। এই সময় আর্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৯০ ডলার। সে সময় দেশের বাজারে লিটার প্রতি ডিজেল বিক্রি হয়েছে ৬৮ টাকা। এই অবস্থায় সে বছর লাভ করেছে পাঁচ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। বিশ্ববাজারে ২০১৩-১৪ অর্থবছর বিশ্ববাজারে তেলের দাম ছিল গড়ে ১২০ ডলার। দেশীয় বাজারে লিটার প্রতি ডিজেল বিক্রি হয়েছে ৬৮ টাকা। আর সে বছর লোকসান হয়েছে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে যখন বিশ্ববাজারে ব্যারেল প্রতি ৮৬ ডলার তখন স্থানীয় বাজারে ৪৪ টাকা লিটার। এতে লোকসান হয়েছে দুই হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। ২০০৫-০৬ অর্থবছর বিশ্ববাজারে ব্যারেল প্রতি দাম ছিল ৭৭ ডলার আর স্থানীয় বাজারে ৩০ টাকা। সে বছর লোকসান হয়েছে তিন হাজার ৩৩৮ কোটি টাকা। লাভ লোকসান মিলে বিপিসির বর্তমানে পুঞ্জিভূত দায় ৪৬ হাজার ৪০৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এরআগে ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। আর ২০০৮ সালে সরকার ক্ষমতায় এসেই তেলের দাম কমিয়েছিল।