এখনই রামপাল প্রকল্প বাতিলের ভাল সময়: আনু মুহাম্মদ

এখনই রামপাল প্রকল্প বাতিলের সবচেয়ে ভালো সুযোগ পেতে পারে সরকার। দেশের বেশির ভাগ মানুষ ও বিশেষজ্ঞ এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে-এই যুক্তি তুলে ধরে সরকার ভারতকে ‘না’ বলতে পারে।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ আয়োজিত ‘রামপাল প্রকল্পের বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি প্রকৌশলী ইমরান হামিম রুমনের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক আবুল বাশার, অধ্যাপক আবদুল আজিজ, পানি বিশেষজ্ঞ ড. ম ইনামুল হক, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বি ডি রহমতউল্লাহ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান এবং সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুল মতিন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, এখনই প্রকল্প বাতিল করার ভাল সময় হবে সরকারের জন্য। কেননা প্রকল্পের অর্থায়ন ও অন্য অবকাঠামোর কাজ শুরু হয়ে গেলে তা থেকে সরে আসা কঠিন হবে। কারণ, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে যৌথ বিনিয়োগ চুক্তি রয়েছে, তাতে একটি রাষ্ট্র যদি মাঝপথে এসে মনে করে এর কারণে তার ক্ষতি হচ্ছে, তখন আর তার ফিরে আসার সুযোগ থাকবে না। তিনি বলেন, এ প্রকল্প থেকে সরে আসতে দেশের স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা বিজ্ঞানসম্মত তথ্য-উপাত্ত সরকারের সামনে তুলে ধরছে। কিন্তু সরকার এই প্রকল্প করার ব্যাপারে এখনো অনড় আছে।
অধ্যাপক আবুল বাশার বলেন, দেশে যত মধু উৎপাদিত হয়, তার অর্ধেক হয় সুন্দরবনে। এই মধু উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করে একধরনের মৌমাছি। এই মৌমাছিটি সুন্দরবনের বেশির ভাগ বৃক্ষের পরাগায়ন ঘটায়। এই প্রাণীটি এতই সংবেদনশীল যে সামান্য দূষণের ঘটনায় এদের প্রজননতন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। ফলে রামপাল প্রকল্প পুরো সুন্দরবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। অধ্যাপক আবদুল আজিজ বলেন, এরইমধ্যে ফারাক্কার কারণে সুন্দরবনে লবণাক্ততা বেড়ে গেছে। সুন্দরীগাছের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। রামপাল প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় যে পানি নেয়া হবে তাতে ভূ-গর্ভে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে পুরো সুন্দরবন এলাকাকে আরো বড় ধরনের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে। ইনামুল হক বলেন, সরকার শক্তির জোরে সুন্দরবনের পাশে রামপাল প্রকল্প করে ফেলতে পারে। কিন্তু এর ফলে এই বনটি চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে।