‘এজেন্ডা ২০৩০ অর্জনে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে পারমানবিক শক্তি’
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, চিকিৎসা বিজ্ঞান, গবেষণা, সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য নিরাপত্তাসহ মানবজাতির প্রভূত কল্যাণ সাধনে আমরা পারমানবিক শক্তির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারি। আর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনে পারমানবিক শক্তি নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্প্রতি জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ‘পারমানবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি (এনপিটি) অনুস্বাক্ষরকারীদের রিভিউ সম্মেলন ২০২০-এর প্রস্তুতি কমিটির তৃতীয় সেশনের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত মোমেন বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ তার প্রথম পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু করেছে যা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
এনপিটির পূর্ণ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, ‘এই প্রতিশ্রুতি এসেছে আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনুসৃত নীতি-আদর্শ থেকে।’
এ বিষয়ে তিনি ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে জাতির পিতা প্রদত্ত বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ‘আমরা স্বাগত জানাই সেই সকল প্রচেষ্টাকে, যার লক্ষ্য বিশ্বে উত্তেজনা হ্রাস করা, অস্ত্র প্রতিযোগিতা সীমিত করা এবং পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান নীতি জোরদার করা।’
স্থায়ী প্রতিনিধি আরো বলেন, পারমানবিক অস্ত্র নিরোধ চুক্তি, রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ক কনভেনশন, বায়োলজিক্যাল অস্ত্র বিষয়ক কনভেনশন, ব্যাপকভিত্তিক পারমানবিক পরীক্ষা নিরোধ চুক্তি ও অস্ত্র বাণিজ্য চুক্তিসহ নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক সকল প্রধান প্রধান বহুপাক্ষিক চুক্তিসমূহে বাংলাদেশ স্বাক্ষরকারী দেশ।
পারমানবিক অস্ত্র ও পারমানবিক ফিউশন সরঞ্জাম ভুল হাতে পড়ার ক্ষেত্রে উদ্ভূত সম্ভাব্য হুমকির ভয়াবহতার বিষয়ে রাষ্ট্রদূত মাসুদ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এনপিটির আর্টিকেল-৬ এর আওতায় অনুসৃত দায়বদ্ধতা এবং ২০০০ ও ২০১০ সালের এনপিটি রিভিউ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত সমূহের আলোকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য স্থায়ী প্রতিনিধি পারমানবিক অস্ত্রধারী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ‘পারমানবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি (এনপিটি) অনুস্বাক্ষরকারীদের রিভিউ সম্মেলন ২০২০’এর প্রস্তুতি কমিটির তৃতীয় সেশন ২৯ এপ্রিল শুরু হয়েছে, যা আগামী ১০ মে শেষ হবে। এই তৃতীয় সেশনই ২০২০ সালের রিভিউ সম্মেলনের চূড়ান্ত সেশন।
উল্লেখ্য, এনপিটি চুক্তি গৃহীত হওয়ার ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২০ সালের এই রিভিউ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।