এলএনজি টার্মিনাল করতে এক্সিলারেট এনার্জির সাথে অনুস্বাক্ষর

মহেশখালীতে তরল প্রকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল করতে সিঙ্গাপুরভিত্তিক যৌথ কোম্পানি অ্যাস্ট্রা ওয়েল অ্যান্ড এক্সিলারেট এনার্জি কনসোর্টিয়ামের সাথে অনুস্বাক্ষর করল পেটোবাংলা। তিন-চার মাসের একটি জরীপের পর চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে।  বৃহষ্পতিবার পেট্রোসেন্টারে এই অনুস্বাক্ষর হয়।
এক্সিলারেটর ভাসমান টার্মিনাল স্থাপন করবে। এখান দিয়ে প্রতিদিন ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস আমদানি করা হবে। এই টার্মিনাল ব্যবহার করতে প্রতি মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের জন্য ৪১ সেন্ট খরচ হবে। এরসাথে অন্য সেবা খরচ যোগ হবে ছয় সেন্ট। মোট লাগবে ৪৭ সেন্ট। এ টার্মিনাল নির্মাণে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে প্রতিষ্ঠানটি
অনুস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, জ্বালানি সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমদ, পরিচালক (পিএসসি) কামরুজ্জামানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, তিন-চার মাসের একটি জরীপের পর চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে। আগামী ২৩ মাসের মধ্যে এ টার্মিনাল বাণিজ্যিকভাবে অপারেশনে আসবে। তিনি জানান, রিগ্যাসিফিকেশন (তরলকে পূনরায় গ্যাসে রূপান্তর) এর জন্য প্রাথমিক প্রস্তাবে মার্কিন কোম্পানিটি প্রথমে ৩৯ সেন্ট হারে দরপত্র জমা দেয়। কিন্তু পরে বিভিন্ন খরচ সমন্বয় করে তারা এই ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। এখন ৪৯ সেন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে।  তিনি বলেন, এই ৪৯ সেন্টের সঙ্গে অন্যান্য চার্জ যুক্ত হয়ে ৫৯ সেন্টের মতো হুইলিং চার্জ পড়বে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ধরণের জ্বালানি ব্যবহারের যুগে ঢুকতে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে চাহিদা আরও বাড়বে। সেই চাহিদা মেটাতে এখনই উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

চুক্তি অনুযায়ি, এক্সিলেটর বাংলাদেশের সমুদ্রে একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে। বাংলাদেশ এই টার্মিনাল ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেবে। এই টার্মিনালে এক লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার গ্যাস ধরবে। তরল গ্যাস আমদানি করে তা টার্মিনালের মধ্যেমে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আনা হবে। পরে বর্তমান গ্যাস পাইপে সরবরাহ করা হবে। বিশ্ববাজারে যখন যে দাম থাকবে সেই দামে কেনা হবে এলএনজি। টার্মিনাল ব্যবহারের জন্য প্রতিবছর পেট্রোবাংলাকে আট কোটি ৬৫ লাখ ডলার দিতে হবে। প্রতিদিন টার্মিনাল ভাড়া দেয়া লাগবে এক লাখ ৫৯ হাজার ১৮৬ ডলার। টার্মিনাল পরিচালনার জন্য প্রতিদিন দেয়া লাগবে ৪৫ হাজার ৮১৪ ডলার। এছাড়া অন্যান্য খরচ দিতে হবে ৩২ হাজার ডলার।

পেট্রোবাংলা সুত্র জানিয়েছে, ২০১১ সালে এলএনজি টার্মিনালের জন্য আগ্রহপত্র (ইওআই) চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে ১০টি আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠান আগ্রহপত্র জমা দেয়। ওই বছরের ডিসেম্বরে আগ্রহী ১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে থেকে চারটিকে নিয়ে সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়।

গত বছর ২৬ জুন অ্যাস্ট্রা ওয়েল অ্যান্ড এক্সিলারেট এনার্জি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে শর্তপত্র (টার্মশীট) স্বাক্ষর করা হয়।