এলজি’র দাম: বিইআরসির আদেশ কেউ মানল না?
সম্পাদকীয়
এলজি’র দাম: বিইআরসির আদেশ কেউ মানল না?
এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সে দামে এখন সকল পক্ষের আপত্তি। আর তাই এ দাম নির্ধারণে কোন উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ঠ উদ্যোক্তারা। আগে যে দাম ছিল সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে এখনও।
নানাজন নানা সমস্যা তুলে ধরছেন। অথচ সকল পক্ষকে এবিষয়ে জানানো হয়েছে। তাদের মতামত দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এলপি উদ্যোক্তাদের সংগঠন নোয়াব বিইআরসিকে চিঠি দিয়েছে। আবার মূল্যায়ন করে দাম ঠিক করতে বলেছে। নোয়াব বলছে, এই দাম বাস্তবায়ন হলে লোকসান হবে। লোকসান দিয়ে ব্যবসায় সম্ভব নয়।
উল্টোদিকে ভোক্তাদের অধিকার আদায়ের সংগঠন ক্যাব বলছে, যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাজার দরের চেয়ে বেশি। ভোক্তা ন্যায্যা দামে এই গ্যাস পাবে না। ন্যায্য দাম নির্ধারণের আবেদন করেছে ক্যাব।
আবার কেউ কেউ বলছেন, সারাদেশে একই দাম কার্যকর করার সুযোগ নেই। বিইআরসির অত জনবল নেই। যা দিয়ে তদারকি করে এই দাম বাস্তবায়ন করা সম্ভব।
এসব কথার যুক্তি নেই। বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাই এমন অনেক পণ্য আছে যা সারাদেশে এক দামে বিক্রি হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহর অবধি। এ ব্যবস্থা বেসরকারি যেমন আছে তেমন আছে সরকারিও। সারাদেশে একই দামে জ¦ালানি তেল বিক্রি হচ্ছে। এবং তা বেসরকারিভাবেই করছে। এই নির্দিষ্ট দামে তেল বিক্রি দেখতে নিশ্চয় বিপিসি’র প্রতিনিধিকে প্রত্যেক তেলের পাম্পে যাওয়া লাগে না। একটা সাধারণ চিপস্ই তো সারাদেশে এক দামেই বিক্রি হচ্ছে। এমন অনেক পণ্য আছে যা এক দামেই বিক্রি হচ্ছে। এভাবেই এলপি’র দামও নির্ধারণ করা যেতে পারে। অন্য আর পাঁচটা পণ্যের মতো।
আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে মিল করে এখন থেকে প্রতিমাসে নির্ধারণ করা হবে এই বোতল গ্যাসের দাম। প্রতিমাসে দাম নির্ধারণের জন্য বিইআরসি কমিটিও করে দিয়েছে। তারা বাজার বিবেচনা করে দাম নির্ধারণ করবে। এখন অপেক্ষা পরের মাসে যে দাম নির্ধারণ হবে তা কতটা সমন্বয় করা হয়। আর বেসরকারি উদ্যোক্তারা তা কতটা মেনে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়।
বাঁশখালীতে আবারও রক্ত ঝরল?
চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে গিয়ে আবারও প্রাণ কেড়ে নিল পুলিশ। ২০১৬ সালে একবার এই কেন্দ্র করতে জমি অধিগ্রহণের সময় পাঁচজন নিহত হয়েছিল। এখন আবার শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির বিক্ষোভে প্রাণ দিতে হল।
এটা মেনে নেয়া যায় না। এঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং কারণ উদ্ঘাটন হওয়া উচিত। মানুষের জীবন এতটাই সহজ? এতটাই সস্তা? মৃত পরিবার পিছু কিছু আর্থিক সহায়তা দিলেই সব ঠিক হয়ে যাবে?
শ্রমিকরা কোথায় তার ন্যায্য অধিকার আদায় করতে গেল আর এখন সে অধিকার তো পেলই না বরং মামলা মাথায় নিয়ে পালিয়ে ঘুরছে। এটা সত্যিই হৃদয়বিদারক। যে শ্রমিকদের প্রাণ কেড়ে নেয়া হলো সেই শ্রমিকদেরই আবার আসামী করে মামলা করা হলো। এটা হতে পারে না। সংশ্লিষ্ঠ তদন্ত সংস্থাগুলোর দ্রæতই এর সকল রহস্য জাতির কাছে উন্মোচন করা উচিত।