কখনই আগাম জানা যায়নি লোডশেড তথ্য
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরাবর রমজান ও গ্রীষ্ম শুরুর আগে বিদ্যুৎ বিভাগ বৈঠক করে। আর এই বৈঠকে ছকে বাধা একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেহরি, ইফতারি ও তারাবিতে লোডশেড করা হবে না। যদি করা হয় তবে আগেই জানিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু সে জানানো আজ পর্যন্ত হয়নি। আজ পর্যন্ত গ্রাহক তা জানতে পারেনি।
অবশ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, মাঝে মাঝে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে কখন কোথায় বিদ্যুৎ থাকবে না তা জানানো হয়েছে। টেলিফোনেও গ্রাহক জেনে নিতে পারেন। কখনও কখনও এলাকাভিত্তিতে মাইকিং করা হয়।
এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা যথেষ্ট। লোডশেডিং নেই। সার্বক্ষ্মনিক বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। তবু সেই একই লোডশেডিং আর উপকেন্দ্র মেরামতসহ গতানুগতিক নির্দেশ এই বৈঠকে। নতুন কিছু নেই।
গত প্রায় ১৫ বছর টানা এমনই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে অনেক পরিবর্তন হলেও এই বৈঠকের পরিবর্তন হয়নি।
এই সিদ্ধান্তের উপকারভোগি কয়জন হলো না হলো তাও জানা যায়নি।
চলতি বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রমজানে ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময়ে লোডশেড নয়, লোডশেড করার প্রয়োজন হলে আগেই জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে। কোন কারণে যেন লোডশেড না হয় সে দিকে সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগ।
প্রতিবারের মত এবারও বিতরণ সংস্থাকে ওভারলোডেড ট্রান্সফরমার পরীক্ষা করে সেগুলো প্রতিস্থাপন করা, পর্যাপ্ত ট্রান্সফরমার মজুদ রাখা, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম জোরদার করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে জনগণকে সচেতন করতে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা করা, সিএফএল-এর পরিবর্তে এলইডি বাতি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা নেয়া, সুপার মার্কেট, পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি গ্যাস স্টেশনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাতি ব্যবহার না করা, ইফতার ও তারাবির সময় ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে এসির ব্যবহার সীমিত রাখা, বিএসটিআই-এর মান অনুযায়ী যন্ত্রপাতি বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করার জন্য ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট হবে। আর সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৩ হাজার মেগাওয়াট। তবে দীর্ঘক্ষণ এক নাগাড়ে ১৩ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা উৎপাদন করা সম্ভব নয়। কারণ চাহিদা এভাবে থাকে না।
আসন্ন রমজান ও চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে … অনলাইনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। সভায় চাহিদা অনুযায়ি বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ করতে নির্দেশ দেয়া হয়।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম বলেন, আমাদের সক্ষমতা থাকলেও অহেতুক বিদ্যুৎ অপচয় করা যাবে না। যারা বিদ্যুৎ উৎপাদন বা অন্যান্য জরুরি কাজে নিয়োজিত তাদের দ্রুত করোনার টিকা নিতে হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিল সংক্রান্ত গ্রাহক হয়রানি যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ওভারলোড সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) মঈন উদ্দিন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুল ফাত্তাহ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসাইনসহ অন্যরা।
=
রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে সভাগ্রীষ্ম-রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ০৫, ২০২১
গতকাল রোববার আসন্ন রমজান ও চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় নিয়ে অনলাইনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সভায় আসন্ন রমজান মাসে ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রগুলো গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত বা বৃদ্ধিকরণ; পিক আওয়ারে (সন্ধ্যাকালীন) চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইফতার, তারাবির নামাজ ও সাহরি সময়ে লোডশেড যেন না হয় সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। লোডশেড করার প্রয়োজন হলে আগেই লোডশেডিং সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে এবং টেকনিক্যাল কারণে বা অন্য কোনো কারণে যেন লোডশেড না হয়, সেদিকে সজাগ থাকতে হবে।
সভায় সব বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানিকে ওভারলোডেড ট্রান্সফরমার পরীক্ষা করে প্রতিস্থাপন করতে হবে এবং স্টোরে পর্যাপ্ত ট্রান্সফরমার মজুদ রাখতে হবে। অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম জোরদার করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা ব্যক্ত করা হয়।
বিদ্যুতের অপচয় রোধে সিএফএল বাল্বের পরিবর্তে এলইডি বাল্ব প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ সুপার মার্কেট, পেট্রলপাম্প ও সিএনজি গ্যাস স্টেশনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাতি ব্যবহার না করারও নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় আসন্ন রমজান মাসে দোকানপাট, মার্কেট ও বিপণিবিতান খোলা রাখার বিষয়ে বিদ্যমান বিধিবিধান অনুসরণ করতে বলা হয়।
সভায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুতের চাহিদা, উৎপাদন ও বিতরণ নিয়ে নাতিদীর্ঘ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। চলতি গ্রীষ্মকালে পিক আওয়ারে ১৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা হতে পারে এবং গ্যাসের সম্ভাব্য চাহিদা ১ হাজার ৫৫০ এমএমসিএফডি হতে পারে।
ভার্চুয়াল এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যান মে. জে. মঈন উদ্দিন (অব.), পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুল ফাত্তাহ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বক্তব্য রাখেন।