কার্বণের মাত্রা কমাতে সহায়ক প্রযুক্তিতে বিনিয়োগে আগ্রহি: বিদ্যুৎ সচিব

জিই’র সেমিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেছেন, আমরা এমন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, যা ইতোমধ্যেই পরীক্ষিত এবং দ্রুত কার্বণের মাত্রা কমাতে সহায়ক। ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে হাইড্রোজেনের ব্যবহার নিশ্চিত করতে জিই’র মতো অভিজ্ঞ বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাতের টেকসই উন্নয়নে সহযোগিতা করতে পারবে বলে তিনি আশা করেন।
জিই আয়োজিত ‘পাওয়ারিং স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
মঙ্গলবার (৯ই মে) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যত ইনডিপেন্ডেন্ট জ্বালানি কোম্পানি জিই ভার্নোভা-এর উদ্ভাবনী সক্ষমত তুলে ধরা হয়।
সেমিনাওে জানানো হয়, জিই’র আধুনিক গ্যাস টারবাইন প্রযুক্তি ব্যবহারে হাইড্রোজেন ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মিশ্রন ব্যবহারে, জ্বালানি সরবরাহ এবং কার্বন-শূণ্য করতে সক্ষম। বর্তমানে বিশ্বব্যাপি জিই’র ১২০ টিরও বেশি গ্যাস টারবাইন আছে, যা ৫ শতাংশ ও ১০০ শতাংশ হাইড্রোজেন দিয়ে চলে। যা এ পর্যন্ত ৮৫ লাখ ঘণ্টার বেশি চলেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করেছে। এখন লক্ষ্য নিরবচ্ছিন্নভাবে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। বিদ্যুৎ পরিকাঠামোকে আরও মজবুত করতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সল্যুশনস ব্যবহার করছি এবং জিই ভার্নোভা এই যাত্রায় এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করি। জিই বহু বছর আমাদের সাথে অংশীদারিত্ব করে আসছে এবং বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহ উন্নয়নে একাধিক ক্ষেত্রে পরিষেবা দিচ্ছে।
জিই গ্যাস পাওয়ার সাউথ এশিয়া’র সিইও দীপেশ নন্দ বলেন, বাংলাদেশে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানির এই নতুন যুগের সূচনায় জিই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জিই কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রযুক্তি এবং প্রয়োজন মতো জ্বালানি সহায়তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানির যোগান দিচ্ছে। আগামীতে দেশের বিভিন্ন উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্পে এইচএ প্রযুক্তির ব্যবহার অব্যাহত রাখবো, যা হাইড্রোজেনকে ঘনীভূত করে প্রকল্পগুলোয় অধিক পরিমাণে জ্বালানির যোগান দিতে সক্ষম। অন্যদিকে, গ্রিডের ভারসাম্য এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করতে আমরা হেভি-ডিউটি ও অ্যারোডেরিভেটিভ গ্যাস টারবাইনের ব্যবহার নিশ্চিত করছি। এটি অত্যাধুনিক পাওয়ারিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের বিদ্যুৎ খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। পাশাপাশি বিভিন্ন শক্তির উৎস ব্যবহার করে একটি যুগোপযোগী ইকোসিস্টেম তৈরিতে জিই’র হাইব্রিড পাওয়ার সল্যুশনগুলো বিশেষ ভুমিকা পালন করবে আশা করি।
বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি অবহেলার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনীতির জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি অর্থনৈতিক মানদণ্ড গঠনে টেকসই পন্থা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ। বক্তারা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যকরিতা, জ্বালানি গতিশীলতা, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভারসাম্য, দেশে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ আনতে নীতিমালা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয়ে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন।
প্যানেল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান; পাওয়ার সেল-এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন; জিই গ্যাস পাওয়ার-এর লো-কার্বন ফুয়েলস বিভাগের ইমারজেন্ট টেকনোলজি ডিরেক্টর জেফরি গোল্ডমেয়ারসহ অন্যরা।