টেংরাটিলার ক্ষতি পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশে আমেরিকার ১৫ প্রতিনিধি দল

টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্র বিস্ফোরনে দায়ি কে তা জানাতে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি রায় দেবে আন্তর্জাতিক আদালত। এদিকে টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রের ক্ষতি পর্যালোচনায় কাজ শুরু করেছে আমেরিকার প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার তারা ক্ষতি পর্যালোচনায় কাজ শুরু করে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতিকুজ্জামান এনার্জি বাংলাকে বলেন, ক্ষতি পর্যালোচনা করতে একাধিক বিদেশী বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন এবং কাজ শুরু করেছে। ক্ষতি পর্যালোচনায় আমেরিকা থেকে ল্যাবরেটরি আনা হয়েছে। টেংরাটিলার ছবি তোলাসহ নিখুঁত পর্যালোনার জন্য প্রতিনিধি দল ড্রোন ব্যবহার করবে বলে তিনি জানান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদেশী বিশেষজ্ঞরা কাজ করবে। ২০০৫ সালে গ্যাস ক্ষেত্রে দুদফা বিস্ফোরনে কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করাই তাদের মুল কাজ। এই প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে বাংলাদেশের সাথে নাইকো রির্সোসের দুটো মামলা চলছে। এর একটি সেদিন বিস্ফোরণের জন্য নাইকো দায়ি কী না আর অন্যটি কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে। বিস্ফােরনের জন্য নাইকো দায়ি কিনা তা বিচার কাজ শেষ। চলতি মাসেই ২২শে ফেব্রুয়ারি এর রায় দেবে আন্তর্জাতিক আদালত। আর কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে তার পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে আগামী ২৫শে মার্চের মধ্যে।
ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করতে আমেরিকার ১৫জনের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে কাজ করছে। বুধবার তারা টেংরাটিলা সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। সেখানে প্রতিনিধি দল ক্ষয়-ক্ষতির হিসাব, গ্রামবাসীর দুদর্শা চিত্র সংগ্রহ এবং স্থানীয় লোকজনের সাক্ষাৎকার নেবেন।
টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্রে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন দুই দফা বিস্ফোরণ হয়। সে সময় নাইকো রিসোর্স এই ক্ষেত্রে গ্যাস তোলার জন্য কূপ খনন করছিল। সেই বিস্ফোরণ হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ক্ষেত্রের চারপাশ দিয়ে  গ্যাস বের হচ্ছে। দশ বছর আগে বিস্ফোরণ হলেও এখনও ঐ এলাকার একাধিক স্থানে গ্যাস বের হচ্ছে। এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
সেই বিস্ফোরনে বাংলাদেশ ক্ষতিপূরণ দাবি করলেও তা দিতে সম্মত হয়নি নাইকো। বাংলাদেশের দাবির চেয়ে অনেক কম ক্ষতি হয়েছে বলে নাইকো দাবি করছে। আর এই বিরোধ মেটাতেই আন্তজাতিক সালিশ আদালতে যায় নাইকো। এদিকে বিরোধ না মেটায় ফেনিতে নাইকো পরিচালিত আর একটি গ্যাস ক্ষেত্রর পাওনা বল্পব্দ করে দেয় পেট্রোবাংলা। এবিষয়েও স্থানীয় আদালতে একটি মামলা চলছে।
আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে মামলা পরিচালনার জন্য আমেরিকার কাউন্সিলিং প্রতিষ্ঠান ফোলি হগ এলএলপিকে নিয়োগ দেয়া হয়।

FOLEY HOAG LLP
২০০৫ সালে বাংলাদেশ দাবি করে টেংরাটিলা বিস্ফোরণে আট বিসিএফ গ্যাস উবে গেছে। এছাড়া  ৮৪ কোটি টাকা সমপরিমান পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু নাইকো দাবি করেছিল মাত্র দুই বিসিএফ গ্যাস উবে গিয়েছিল।
নাইকো ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সালিসি আদালত ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর সেটেলমেন্ট অব ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউট (আইসিএসআইডি-ইকসিড) – এ মামলাটি করলেও এর শুনানী হচ্ছে লন্ডনে। মামলা দুটির নম্বর যথাক্রমে ১০/১১ এবং ১০/১৮।