কয়লা বিদ্যুতে জনগণের সহায়তা চেয়েছে সরকার
পরিবেশ সংরক্ষণ করেই কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বার্থে জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে সরকার জনগণকে সহায়তা করতে অনুরোধ করেছে।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে শনিবার বিদ্যুৎ বিভাগের দেয়া এক বক্তব্যে একথা বলা হয়। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে বলেও ব্যাখ্যায় জানানো হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের বক্তব্যে বলা হয়, ‘বর্তমানে দেশে যে কয়টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা¯তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা পরিবেশ ও জন স্বার্থ সংরক্ষণ করেই বাস্তবায়ন করা হবে। জাতির বৃহত্তর স্বার্থে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বাস্তবায়নে সকলকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’ বলা হয়, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিতব্য প্রতিটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থান নির্বাচনের আগে দুই তিন বছর ধরে সম্ভাব্যতা যাচাই এবং পরিবেশের প্রভাব যাচাই করা হয়। একই সাথে সামাজিক প্রভাবও যাচাই করা হয়। এভাবে ১০-১২টি সমীক্ষা শেষ করে প্রকল্পের স্থান নির্বাচন করা হয়।
প্রতিটি প্রকল্পের অধীনে যে সমস্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য পর্যাপ্ত পূণর্বাসনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে তারা আধুনিক জীবন-যাপন করতে পারে। এ সব প্রকল্প থেকে স্থানীয় জনগণের জন্য প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ মাত্র তিন পয়সায় দেয়া হবে। ১৩২০ মেগাওয়াট প্রতিটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩২ কোটি টাকা প্রতি বছর সংরক্ষিত হবে। যা স্থানীয় অধিবাসিদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে খরচ হবে। তাই এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থানীয় জনগণের বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা, কর্মসংস্থানের সৃষ্টি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
ব্যাখ্যায় বলা হয়, জার্মানীর ফ্রাঙ্কফুর্টসহ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে মূল শহরে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি আর অত্যাধুনিক ব্যবস্থাপনার ফলে কয়লা ব্যবহার করেও পরিবেশের বিরূপ প্রভাব মুক্ত রাখা সম্ভব হচ্ছে। এমনকি বড়পুকুরিয়ায় অবস্থিত পূরনো প্রযুক্তি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত হওয়া সত্তে¡ও এ পর্যন্ত এর কোন ক্ষতিকর প্রভাবের কথা শোনা যায়নি।
উন্নত দেশে গড়ে মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের হার বার্ষিক যেখানে ২০ টন সেখানে বাংলাদেশে মাত্র ০ দশমিক ২৫ টন। তবু সরকার দূষণের মাত্রা ন্যূনতম রাখতে বদ্ধপরিকর।
বলা হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশ হবে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে হবে একটি উন্নত দেশ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা। ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রয়োজন হবে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ২০৪১ সালে প্রয়োজন হবে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। ২০০৭ সালে ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। কিন্তু, অর্থনৈতিক উন্নতির সাথে সাথে গ্যাসের চাহিদা বেড়েছে বহুগুণে। বিদ্যুৎ খাতে, শিল্প খাতে, পরিবহন খাতে, বাণিজ্যিক খাতে, সার উৎপাদনে, আবাসিক রান্নার কাজে সবখানে গ্যাস প্রয়োজন। কিন্তু, গ্যাসের উৎপাদন সীমিত। বিদ্যুৎখাতের মহাপরিকল্পনায় কয়লাকে প্রধান জ্বালানি রাখা হয়েছে।