গভীর সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহী মাত্র দুই কোম্পানি
দেশের গভীর সমুদ্রের তিনটি ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ব্যাপারে দুটি আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি (আইওসি) আগ্রহ দেখিয়েছে। আয়ারল্যান্ডের তাল্লো অয়েল (ক্রিসএনার্জি) এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দাইয়ু পেট্রোবাংলায় আগ্রহপত্র (ইওআই) জমা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দরপত্র এড়িয়ে বিদ্যুত্ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ আইন (বিশেষ বিধান) ২০১০’র আওতায় আগ্রহপত্র আহবান করা হয়েছিল। ফলে আরো বেশি সংখ্যক কোম্পানি ইওআই জমা দেবে বলে আশা ছিল পেট্রোবাংলার। কিন্তু মাত্র দুটি কোম্পানি সাড়া দেয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনেকটাই হতাশ।
বাংলাদেশ তৈল গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের (পেট্রোবাংলা) পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, সমুদ্রের ১২, ১৬ ও ২১ নম্বর ব্লকে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে আগ্রহপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল গত বৃহস্পতিবার। দুটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি ইওআই জমা দিয়েছে। তাদের প্রস্তাবনা জমা দেয়ার জন্য আহবান করা হবে। প্রস্তাবনা মূল্যায়নে যে কোম্পানি সবচেয়ে বেশি যোগ্য হবে তার সাথেই চূড়ান্ত চুক্তি করবো। তিনি বলেন, যে কোম্পানিকে নির্বাচিত করা হবে তারাই অনুসন্ধান প্রকল্পে খরচ বহন করবে। জ্বালানি সন্ধানের উপর তাদের খরচ পরিশোধের ধরন নির্ভর করবে।
পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, সমুদ্রের ২০ থেকে ২০০ মিটার গভীরে তিনটি ব্লকের অবস্থান। গভীর সমুদ্রের ১২, ১৬ ও ২১ নম্বর ব্লকের আয়তন যথাক্রমে ৩ হাজার ৫৬০ বর্গ কিলোমিটার, ৩ হাজার ৩৫৩ এবং ৩ হাজার ২০৪ বর্গ কিলোমিটার।
এর আগে ২০১২ সালে এই তিনটি ব্লকের বিপরীতে দরপত্র আহবান করেছিল পেট্রোবাংলা। পরবর্তীতে তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য নরওয়ের স্টেটঅয়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের কনকোফিলিপস’র সমান ৫০ শতাংশের যৌথ অংশীদারিত্বের (জেভি) প্রস্তাব গ্রহণ করে রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি। কিন্তু ২০১৫ সালের এপ্রিলে উত্পাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) স্বাক্ষরের আগেই ‘কম আর্থিক লাভের’ কারণ দেখিয়ে সরে যায় কনকোফিলিপস।
পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান, কনকোফিলিপস সরে যাওয়ার পর স্টেটঅয়েল আর্থিক লাভ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে একাই অনুসন্ধান কাজ পরিচালনার আগ্রহ প্রকাশ করে। কোম্পানি তিনটি ব্লক থেকে উত্তোলিত খনিজের দাম তাদের প্রথম প্রস্তাবনায় উল্লেখিত মূল্যহারের চেয়ে বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিবছর আরো ২ শতাংশ হারে বৃদ্ধির দাবি জানায়। এছাড়া গভীর সমুদ্র থেকে তীর পর্যন্ত পাইপলাইন নির্মাণের খরচও স্টেটঅয়েলের বহন করার কথা ছিল। স্টেটঅয়েলের সাথে আলোচনার পর বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠায় পেট্রোবাংলা। কিন্তু মন্ত্রণালয় ঐ প্রস্তাবনা বাতিল করে পেট্রোবাংলাকে নতুন করে আগ্রহপত্র আহবান করতে বলে।