গভীর সমুদ্র থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে তেল পরিবহনে চুক্তি সই
মহেশখালীর গভীর সমুদ্র থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেল পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহনে ৪৬ দশমিক ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক। প্রতি ডলার সমান ৮০ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। ‘ইনস্টালেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপ লাইন’ প্রকল্পের আওতায় ঋণ দিচ্ছে চীন। মহেশখালী থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত দুটি পাইপ লাইন নির্মিত হবে। প্রতিটা পাইপ লাইনের দৈর্ঘ্য হবে ১১০ কিলোমিটার করে। পরিশোধিত এবং অপরিশোধিত মিলিয়ে বছরে ৯মিলিয়ন টন তেল পরিবহন করা সম্ভব হবে।
আজ রোববার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে দুই দেশের সরকারের মধ্যে এ ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট (কাঠামোগত চুক্তি) স্বাক্ষর হয়। এতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম ও ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াং সই করেন। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৬০ কোটি ডলার। বাকি অর্থ জিওবি খাত থেকে মেটানো হবে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে গভীর সমুদ্র বন্দরের নিচ দিয়ে দুটি তেল পাইপ নির্মিত হবে। একটি দিয়ে পরিশোধিত, অপরটি দিয়ে অপরিশোধিত তেল পরিবহন করা হবে। এতে সিস্টেম লসসহ সময় কমবে। দেশে তেল সঞ্চালনে এক নতুন গতি আসবে। এটা আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প। এই প্রকল্পে সহায়তা করার চীন সরকারের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞ। এটা শুধু পাইপ লাইন নির্মাণ নয় দুদেশের জনগণের মধ্যে একটি সেতু বন্ধনও বটে। তিনি বলেন, মহেশখালী দ্বীপ নিয়ে মাস্টার প্ল্যান হচ্ছে। এখানে বিদ্যুৎ হাব হবে। ইতোমধ্যে ইকোনোমিক জোনও হচ্ছে। চীনা আমাদের ঋণ সহায়তা দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি আরও বেগবান করছে। আমরা রাজধানীর সব ক্যাবল মাটির নিচে নিতে চায় এখানেও চীন আমাদের সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী বছরের জানুয়ারি মাস থেকে দুটি পাইপ লাইন নির্মাণ শুরু হবে। ৩৬ মাস ধরে নির্মিত হবে পাইপ। ফলে আগে যখন গভীর সমুদ্র বন্দর থেকে ছোট জাহাজে চট্টগ্রামে তেল আনতে ১২ দিন সময় লাগতো এখন লাগবে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে। এবং দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। অপরিশোধিত ও পরিশোধিত তেল আমদানিতে যে অপচয় হতো তা কমানো সম্ভব হবে। ফলে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে প্রায় ১০ কোটি ডলার অপচয় কমবে।
এ প্রকল্পে বার্ষিক সুদের হার ২ শতাংশ। পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছর মেয়াদী শর্তে এক্সিম ব্যাংক অব চায়না এই ঋণের অর্থ দেবে।