গ্যাসের দাম বাড়লো: দুই চুলার গ্যাসে ৯৫০ টাকা মাসে
গড়ে ২২ দশমিক ৭৩ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে বিইআরসির নতুন কমিটি। আবাসিক ও সিএনজিসহ সব ধরণের গ্যাসের দামই বাড়ানো হয়েছে। দুই ধাপে এই দাম কার্যকর হবে। প্রথম ধাপ ১লা মার্চ থেকে এবং দ্বিতীয় ধাপ ১লা জুন থেকে।
মার্চ মাস থেকে এক চুলা ব্যবহারকারীদের ৬০০ টাকার পরিবর্তে ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৬৫০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা দিতে হবে। জুন মাসে গিয়ে দিতে হবে এক চুলায় ৯০০ এবং দুই চুলায় ৯৫০ টাকা। এক চুলায় গড়ে বেড়েছে ৫০ শতাংশ এবং দুই চুলায় বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। আবাসিকের মিটার ব্যবহারকারিদের প্রতি ঘনমিটার এখন দাম সাত টাকা। এটা প্রথম ধাপে বাড়তি দিতে হবে ৯ টাকা ১০ পয়সা এবং দ্বিতীয় ধাপে ১১ টাকা ২০ টাকা।
প্রতি ঘনমিটার সিএনজির দাম ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানোর হয়েছে। এরমধ্যে ১ মার্চ থেকে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৮ টাকা এবং ১ জুন থেকে ৪০ টাকা করা হয়েছে।
বিদ্যুতের ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে ১২ দশমিক ০৫ শতাংশ। প্রতি ঘনমিটারে ২ টাকা ৮২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১ মার্চে ২ টাকা ৯৯ পয়সা এবং ১ জুন থেকে ৩ টাকা ১৬ পয়সা করা হয়েছে। ক্যাপটিভে বাড়ানো হয়েছে ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ। এক্ষেত্রে ৮ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১ মার্চে ৮ টাকা ৯৮ পয়সা এবং ১ জুন থেকে ৯ টাকা ৬২ পয়সা।
সারে বাড়ানো হয়েছে ৫ দশমিক ০৩ শতাংশ। ১ মার্চ থেকে ২ টাকা ৫৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ১ জুন থেকে ২ টাকা ৭ পয়সা। শিল্পে ১৫ দশমিক ১৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এরমধ্যে ১ মার্চ থেকে ৬ টাকা ৭৮ থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ২৪ পয়সা এবং ১ জুন থেকে ৭ টাকা ৭৬ পয়সা করা হয়েছে। চা বাগানের ক্ষেত্রে ১৫ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং বাণিজ্যিকে ৫০ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুরেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কার্যালয়ে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়। সে সময় বিইআরসির চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য মো. আবদুল আজিজ খান, মো. মিজানুর রহমান, মাহবুবুলউল হক ভূইয়া, রহমান মুরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
মনোয়ার ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পেট্রোবাংলাকে অনেক বেশি দামে গ্যাস কিনে কম দামে গ্রাহকদের কাছে গ্যাস বিক্রি করতে হচ্ছে। এই গ্যাসের দাম সমন্বয়ের জন্যই গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া গ্রাহকদের জ্বালানি ব্যবহারের বৈষম্য কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রাহকদের ওপর যাতে হঠাৎ করে চাপ না পড়ে সেজন্য দাম দুই ধাপে বাড়ানো হয়েছে।
গত বছরের আগস্ট মাসে বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাাবিত দামের ওপার গণশুনানী করে বিইআরসি। সেই সময় বিইআরসির মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশিরভাগ কোম্পানিই লাভ করছে, ফলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দরকার নেই।
২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর আবাসিকসহ কয়েকটি শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। সে সময় দুই চুলায় ১৫০ টাকা বাড়িয়ে ৬৫০ এবং এক চুলায় ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছিল। তার আগে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সব ধরনের গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়।
এদিকে গ্যাস সঞ্চালন কোম্পানি জিটিসিএল এর সঞ্চালন চার্জও ১০ পয়সা বাড়িয়েছে বিইআরসি। দশমিক ১৫৬৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে দশমিক ২৬৫৪ পয়সা করা হয়েছে।
এদিকে এই গ্যাসের দাম বাড়ানোর ফলে কোম্পানিগুলোর বছরে আয় বাড়বে চার হাজার ১৫ কোটি টাকা। সব কোম্পানিই এখন লাভ করছে। এতে লাভ আরও বাড়বে।