গ্যাসের ন্যায্য দাম কবে হবে?
আবাসিক গ্যাস ব্যবহারকারিরা দামের ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। একই নগরীতে থেকে রান্নার জ্বালানি দিতে হচ্ছে ভিন্ন দাম। এতে কিছু গ্রাহক ন্যায্য দামে গ্যাস ব্যবহার করতে পারছেন। আর বেশিরভাগ গ্রাহক বেশি দাম দিয়ে কিনছেন। সাথে বোতল গ্যাস আর পাইপলাইনের বিড়ম্বনা তো আছেই।
গ্যাসের যারা প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন তারা মাসে গড়ে ৪০০ টাকার গ্যাস নেন। এক পরিবারে এক মাসে গড়ে ৪০০ টাকার গ্যাসে হয়ে যায়। কিন্তু মিটার ছাড়া দুই চুলা ব্যবহারকারীদের একই সময়ে ৯৭৫ টাকা দেয়া লাগে। একইভাবে যারা বোতল গ্যাস ব্যবহার করেন তাদের দিতে হয় মাসে গড়ে তিন হাজার টাকা।
পাশাপাশি থেকে এক পরিবার মাসে ৪০০ টাকা, এক পরিবার ৯৭৫ টাকা আর অন্য এক পরিবারকে গড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অথচ এই সকলের চাহিদা ও উপযোগ সমান।
গ্যাসের এই দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বোতল গ্যাসের দাম ছাড়া।
আবাসিক রান্নায় প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১২ টাকা ৬০ পয়সা। মাসে পরিবার প্রতি গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হয়। আর তার দাম গড়ে ৪০০ টাকা। আর যারা প্রিপেইড মিটার ছাড়া গ্যাস ব্যবহার করেন তারা মাসে দেন ৯৭৫ টাকা অর্থাৎ ৭৭ ঘনমিটার গ্যাসের দাম। মাসজুড়ে রান্না করলেও এই পরিমান গ্যাস ব্যবহার করা সম্ভব নয়। আর বোতলেও ৩০ ঘনফুট সমপরিমান গ্যাস ব্যবহার করে দিতে হচ্ছে প্রায় ৩ হাজার টাকা। বিইআরসি’র নির্ধারণ করে দেয়া দামের হিসেবে প্রিপেইড আর প্রিপেইড ছাড়া গ্রাহকদের মধ্যে প্রতি মাসে পার্থক্য প্রায় ৪০ থেকে ৫০ ভাগ। অর্থাৎ প্রিপেইড ছাড়া গ্রাহকদের মাসে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।
বিইআরসি’র সদস্য (গ্যাস) ও জ¦ালানি বিশেষজ্ঞ মো. মকবুল-এ-ইলাহী চৌধুরী এনার্জি বাংলাকে বলেন, প্রিপেইড মিটারের ব্যবহার বাড়লে এই বৈষম্য দূর হবে। এবিষয়ে নীতিমালা করা হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করবে বিতরণ কোম্পানিগুলো। এবিষয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে নিয়মিত তাগাদা দেয়া হচ্ছে।
প্রিপেইড মিটার শুধু গ্রাহকের সাশ্রয়ী করবে না। গ্যাস অপচয়ও কমাবে। বিইআরসি’র আবাসিক পর্যায়ে পিপেইড/স্মার্ট গ্যাস মিটার ক্রয় ও স্থাপন নীতিমালা-২০১৯- এ বলা হয়েছে, মিটারবিহীন গৃহস্থালি গ্রাহকদের প্রিপেইড গ্যাস মিটার দিলে প্রতি চুলায় ৩৩ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় হবে। বছরে প্রায় ৫৩ বিসিএফ (বিলিয়ন কিউবিক ফিট)। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
সারাদেশে গ্যাসের আবাসিক গ্রাহক ৪৩ লাখ। এর মধ্যে শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রামের মাত্র তিন লাখ গ্রাহক প্রিপেইড মিটার। ছয় কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাসিক গ্রাহক তিতাস গ্যাসের। তিতাসের গ্রাহক ২৮ লাখ ৪৬ হাজার ৪১৯। এর মধ্যে ২ লাখ সাড়ে ১২ হাজার প্রিপেইড মিটার। তিতাস জানিয়েছে, নতুন করে ৮ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।