গ্যাস বিক্রিতে লাভ: দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই
তিতাস গ্যাস কোম্পানি লাভ করছে। আগামী অর্থবছর কোম্পানি পরিচালনা করতে কোন বাড়তি অর্থের প্রয়োজন নেই। বরং ২০১৬-১৭ অর্থবছর খরচ বাদ দিয়ে ৩৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বাড়তি থাকবে।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি হিসাব পর্যালোচনা করে এই তথ্য দিয়েছে। সোমবার বিইআরসিতে অনুষ্ঠিত তিতাসের গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের গণশুনানীতে এই প্রতিবেদন উপস্থান করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তিতাসের প্রতিঘনমিটার গ্যাস পরিচালনায় খরচ ৪১ পয়সা করে। কিন্তু এখন গ্রাহকের কাছ থেকে নিচ্ছে ৬২ পয়সা। প্রতি ঘনমিটারে ২৩ পয়সা করে লাভ হচ্ছে। তবে রাজ¯^ চাহিদা মেটাতে আরও দুই পয়সা করে প্রয়োজন হবে।
সোমবার টিসিবি অডিটরিয়ামে বিইআরসি) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রস্তাবিত গ্যাসের দামের ওপর গণশুনানী করে।
শুনানি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান এ আর খান, সদস্য মাকসুদুল হক ও রহমান র্মুশেদ। তিতাসের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মশিউর রহমান, পরিচালক (অর্থ) উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভোক্তাদের প¶ে অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ড. এম সামসুল আলম, জোনায়েদ সাকিসহ বিভিন্ন পেশা ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, এখন তিতাস লাভ করছে। এই অবস্তায় গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু তিতাস বলছে, উন্নয়ন কাজের জন্য আয় বাড়ানো প্রয়োজন। দাম না বাড়ালে উন্নয়ন কাজ করা যাবে না।
নুরুল ইসলাম বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো যেতে পারে। যারা গ্যাস পাচ্ছে না, যারা লাকড়ি দিয়ে রান্না করছে তাদের মাসে গড়ে খরচ হয় এক হাজার টাকা। সে হিসেবে গ্যাসের দাম এক হাজার ২০০ টাকা করা যেতে পারে। ক্যাপটিভ বিদ্যুতের ক্ষেত্রে কো-জেনারেশন করা যেতে পারে। তবে গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে গ্রিডের বিদ্যুৎকে।
শামসুল আলম গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিরোধীতা করে বলেন, যে কোম্পানি মুনাফা করছে, যে কোম্পানি আয় অনুযায়ি গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। কোম্পানি গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, সরকারের পরিকল্পনার অভাবে জ্বালানিখাত এখন বিপযর্স্ত। গ্যাসের দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তিই নেই।
তিতাস আবাসিক দুই চুলা ৬৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, এক চুলা ৬০০ থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ১০০ টাকা আর প্রতি ঘনমিটার সাত টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা ৮০ পয়সা করার প্রস্তাব করে। শিল্পকারখানার ক্যাপটিভ পাওয়ারে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম আট টাকা ৩৬ পয়সা থেকে ১৯ টাকা ২৬ পয়সা, যানবাহনের সিএনজি ২৭ থেকে ৪৯ দশমিক ৫০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এছাড়া বিদ্যুতে প্রতি ঘনমিটার দুই টাকা ৮২ পয়সা থেকে চার টাকা ৬০ পয়সা, সার কারখানায় দুই টাকা ৫৮ পয়সা থেকে ৪ টাকা ৪১ পয়সা করার প্রস্তাব দেয় তিতাস।