গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক: বিএনপি
গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোকে ‘অযৌক্তিক’ দাবি করে বিএনপি বলেছে, এর ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে।
গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে একথা বলা হয়।
সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন।
তিনি বলেন, ‘এ বছরের শুরুতে অস্থির রাজনৈতিক সময়ে বিনা ভোটের নির্বাচিত সরকারের মত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন তথাকথিত লোক দেখানো শুনানির নামে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির যে ঘোষণা দিয়েছে-বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি তার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ করছে।’
রিপন বলেন, ‘জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করা দল হিসেবে বিএনপি মনে করে এ দাম বৃদ্ধি অযৌক্তিক এবং এর ফলে নিম্ন আয় ও মধ্যবিত্ত মানুষেরা আরেক দফা দুর্ভোগে নিপতিত হবেন। যখন সাধারণ মানুষ দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় তাপে অস্থির এবং আয়ের সাথে ব্যয়ের সামঞ্জস্য না থাকাতে মানুষের এমনিতেই নাভিশ্বাস তখন গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ফলে সংসার চালাতে তাদের আরো হিমশিম খেতে হবে।’
গ্যাস খাতে যেখানে সরকারের ভর্তুকি দিতে হয় না এবং লোকসানও নেই- দাবি করে রিপন বলেন, ‘পাঁচ বছরে যেখানে প্রেট্রোবাংলা ২০ হাজার ৮০ কোটি টাকা লাভ করেছে সেখানে গৃহস্থালি কাজে এক বার্নার ও দুই বার্নার চুলায় এক লাফে ২০০ টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের প্রতি নিদারুণ অবিচার। শুধু তাই নয়, আবাসিক লাইনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৫.১৬ টাকা থেকে ৭ টাকা করেছে।’
জনগণের প্রকৃত ভোটে নির্বাচিত হলে সরকার নিজেদের জবাবদিহিতা করার কথা ভাবতেন- এমন মন্তব্য করে রিপন বলেন, ‘কিন্তু ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় আসা যায় বা ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখা যায় বলে তারা দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা যেমন ভাবেননি, তেমনি কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-রফতানিতে এই দাম বৃদ্ধি কীভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে-সে বিষয়টিও আমলে নেননি।’
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘আর্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয়ও কমে যাওয়ারই কথা। কিন্তু তা না করে সরকার উল্টো বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে আর গ্যাসখাত লাভজনক হওয়া সত্ত্বেও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা অত্যন্ত অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য। আর্ন্তজাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম গত এক বছরের তুলনায় এক তৃতিয়াংশে নেমেছে এবং অব্যাহতভাবে তেলের দাম কমছে কিন্তু বাংলাদেশে বিদুত্যের দাম বাড়ায় দেশের জগণ কোনও সুফল পাচ্ছে না। আমরা সরকারের এই গণবিরোধী নীতির তীব্র সমালোচনা করছি।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের আজ্ঞাবাহী বিইআরসি দাম বাড়ানোর জন্য দেশের অস্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যে তিনদিন ব্যাপী গণশুনানি করেছে-সেই গণশুনানির রায় ছিল দাম না বাড়ানোর। কিন্তু লোক দেখানো শুনানির নামে নিজেদের ইচ্ছামতো তারা গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছেন। আমাদের দল বিইআরসির মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণাকে বাতিলের দাবি জানাচ্ছে এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নতুন করে গণশুনানির আয়োজন করে বিএনপিসহ দেশের সকল স্টেক হোল্ডারদের মতামত নেয়ারও আহ্বান জানাচ্ছে।’
এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে তেলের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবিও জানানো হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।