গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার চিতাশাল এলাকায় গ্যাস বিস্ফোরণে এক পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়েছে। তারা হলেন-রায়হান (৩৫), তার স্ত্রী মায়া (২৮) ও তাদের দেড় বছরের শিশু মরিয়ম। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘরের ভেতর জমে থাকা গ্যাসের কারণেই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে স্থানীয় বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে এ বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে দুই রুমের একটি টিনশেডের চাল উড়ে যায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রতিবেশীরা জানান, গতকাল সোমবার পার্শ্ববর্তী সাখান মিয়ার বাড়ির গ্যাসের রাইজারে লিকেজ হয়ে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল। বিল্লাল হোসেন তাঁর বাড়ির ভাড়াটেদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে গ্যাস লিকেজ বন্ধের জন্য সাখান মিয়াকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডাও হয়। তবে তারা কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাতভর ওই লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গত হয়। নির্গত গ্যাস বিল্লাল হোসেনের বাড়ির ভাড়াটে দিনমজুর রায়হানের ঘরে জমা হয় বলে ধারণা করছেন তারা।
আজ সকালে রায়হান ঘুম থেকে উঠে ধূমপান করতে গেলে ঘরে আগুন ধরে যায় এবং বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তাঁদের ঘরের চাল উড়ে যায় এবং সব আসবাব পুড়ে যায়। আগুনে রায়হান, তাঁর স্ত্রী মায়া এবং তাঁদের দুই বছরের মেয়ে মরিয়ম গুরুতর দগ্ধ হয়।
বিস্ফোরণের শব্দ পেয়ে আশপাশের লোকজন এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন এবং দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত এই রাইজারের লিকেজ মেরামত না করলে আরো বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
খবর পেয়ে বন্দর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলেন, জমাট বেঁধে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এদিকে প্রায়ই গ্যাসের আগুনে দগ্ধ হওয়ার খবর আসে গণমাধ্যমে। এসব ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটে। চলতি সপ্তাহের সোমবারও রাজধানীর গুলশানের নাভানা টাওয়ারে রান্না করার সময় গ্যাসের আগুনে পুড়ে তিন গৃহকর্মী দগ্ধ হয়েছেন।
চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি উত্তরাতেই একটি বাড়িতে রান্নাঘরের গ্যাসের লাইন ছিদ্র হয়ে লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে অন্তত তিন জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়া রাজধানীর বনানীতে একটি বহুতল ভবনে গ্যাসের লাইন ছিদ্র হয়ে লাগা আগুনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় কয়েক মাস আগে।
গত ঈদুল ফিতরের আগে উত্তরার আলাউদ্দিন টাওয়ারে আগুন লেগে ১০ জনেরও বেশি মৃত্যুর ঘটনায় পাইপলাইন ছিদ্র হয়ে গ্যাস ছড়িয়ে যাওয়াকেই দায়ী করা হয়েছে।
গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস বলছে, গ্যাসের লাইন সঠিকভাবে তত্ত্বাবধান করা হয় না। এসব বিষয়ে খুব বেশি সচেতনতা নেই বলে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।