ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’, বন্দরে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত
বিডিনিউজ:
রাতভর শক্তিসঞ্চয়ের পর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি অবশেষে ‘মিধিলি’ নামের ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় সতর্ক সংকেতও বদলে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার সকালে আবহাওয়ার সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ৬২ কিলোমিটার, যা ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুন্দ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি ভোরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মংলা সমুদ বন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে।
“এটি আরও উত্তর উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।”
তিনি বলেন, “মিধিলির কারণে দুপুর থেকে বাতাসের গতি বাড়বে। আর সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র বাংলাদেশ অতিক্রম শুরু করবে।”
ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা ও চরাঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, “এর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়বে এবং বিপদ সংকেতও বাড়ানো হতে পারে।”
নিম্নচাপের প্রভাবে প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায় মধ্যরাত থেকে যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, শুক্রবারও তা চলছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টিপাতের পরিমাণও বেড়েছে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকা ও চরাঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া ও বর্ষণ হচ্ছে।”
ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানান তিনি।
সাগর উত্তাল থাকায় সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের সভা শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে ভোর নাগাদ গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
এটি বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট ও চট্টগ্রামে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেছিলেন, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলেও এটি হবে খুবই দুর্বল।
আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেওয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়।
সবশেষ ২৪ অক্টোবরে বাংলাদেশ উপকূলে আসে ঘূর্ণিঝড়’ হামুন। এটি কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। তাতে গাছপালা-ঘরবাড়ির ক্ষত হয় বেশ, প্রাণ যায় অন্তত চারজনের।
চলতি বছর মে মাসে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’।