ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: বন্দরে বিপদ সংকেত
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বাংলাদেশের পায়রা উপকূলের ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় সংকেত বাড়িয়েছে আবহাওয়া অফিস।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার বদলে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হঁশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার বদলে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদীবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুল রহমান রোববার দুপুরে সরকারের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির বিভিন্ন তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমরা ধারণা করছি, গত তিন বছরের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ব্যাপক বিস্তৃত এলাকায় আঘাত হানবে। উপকূলীয় ১৯টি জেলাকে আমরা ঘূর্ণিঝড় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করছি। সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে আগাম প্রস্তুতির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে।”
গত তিন বছরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ফনী, বুলবুল, আম্পান, ইয়াস, গুলাব, জোয়াদ ও সবশেষ আসানি ভারত বা বাংলাদেশ উপকূলে এসেছে।
আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরফিুজ্জামান ভুইয়া জানান, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর সবশেষ তথ্যানুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি ২৫ অক্টোবর ভোরে বাংলাদেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে ২৪-২৬ অক্টোবর উপকূলীয় অঞ্চলসহ দক্ষিণা পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হবে।
এর ফলে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের অনেক স্থানে আকস্মিক বন্যা এবং পূর্বাঞ্চল. উত্তর পূর্বাঞ্চলের মুহুরী, মুন, খোয়াই, সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীরর পানি বাড়তে পারে এবং সময় বিশেষে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।
গতিমুখ বাংলাদেশের দিকে
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘূর্ণিঝড়টি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার ভোর নাগাদ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।”
প্রায় একই ধরনের পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া অফিস।
সেখানে বলা হয়, ঘূর্ণিবায়ুর চক্রটি বাঁক নিয়ে উত্তর উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং শক্তি বাড়িয়ে সোমবার প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।
বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে সেই প্রবল ঘূর্ণিঝড় মঙ্গলবার ভোরের দিকে বরিশাল বিভাগের তিনকোনা দ্বীপ ও চট্টগ্রাম বিভাগের সন্দ্বীপের কাছ দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন।