চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ বিভ্রাট

চট্টগ্রামে বিদ্যুত্ নিয়ে ভোগান্তি বেড়েছে। আবহাওয়া বিরূপ হলেই বিতরণ লাইনে ত্রুটি, ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে বিদ্যুত্ সরবরাহ দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকছে। অনেক এলাকা ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎহীন থাকছে। গ্রাহকদের অভিযোগ পিডিবির অভিযোগ কেন্দ্রে জানানোর পরও সাড়া মিলছে না। আর  টাকা ছাড়া দ্রুত সেবা মিলছে না। এছাড়া পিডিবির চলমান বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম ধীরগতিতে চলায় জনভোগান্তি বেড়েছে। প্রকল্পের কাজ চলাকালে বিদ্যুত্ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

বিদ্যুত্ সরবরাহে কোন ঘাটতি না থাকলেও ক্রুটিপূর্ণ বিতরণ ব্যবস্থার কারণে রমজান মাসে বিদ্যুত্ নিয়ে ভোগান্তি বেড়েছে। কোথাও বিতরণ লাইন ছিড়ে , কোথাও ট্রান্সফরমার বিকল হয়ে আবার কোথাও প্রকল্পের কাজের জন্য বিদ্যুত্ বন্ধ থাকছে। পিডিবির বিতরণ বিভাগের অভিযোগ কেন্দ্রগুলো জানায়, দুর্বল বিতরণ লাইনের কারণে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। টেকনিক্যাল জনবলের সংকট ও যানবাহন স্বল্পতায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। মেরামত কাজে বিলম্ব হওয়ায় গ্রাহকের ভোগান্তি বেড়ে যাচ্ছে।

পিডিবি কালুরঘাট বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বৃষ্টির কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে তা দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে। টেকনিক্যাল জনবলের সংকট রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত লোক নিয়োগ হচ্ছে না। পাথরঘাটা বিতরণ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান,  জনবলের ঘাটতির কারণে মাঠ পর্যায়ে দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।

পিডিবি জানায়, রমজান মাস শুরুর আগে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা ছিল ১১০০ থেকে ১২০০ মেগাওয়াট। আর রমজান শুরুর পর বিদ্যুতে চাহিদা কমে দাঁড়িয়েছে ৯০০ থেকে ৯৫০ মেগাওয়াট।
পিডিবি চট্টগ্রাম জোনের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, ‘তারাবি নামাজের জন্য রাতে মিল কারখানা বন্ধ থাকে। বৃষ্টির কারণে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকায় চাহিদা কম। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের চাহিদা ১০০ থেকে ১৫০ মেগাওয়াট কমেছে। তবে ১৫ রমজানের পর চাহিদা আবার বাড়বে। বিদ্যুতের সরবরাহ নিয়ে কোন ঘাটতি নেই। সিস্টেমের কারণে কিছু সমস্যা হতে পারে।

চট্টগ্রাম জোনের বিদ্যুত্ বিতরণ সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৫ সালে। প্রায় ১১শ’ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ প্রকল্পের আওতায় নতুন সাবষ্টেশন নির্মাণ, পুরাতন সাবষ্টেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি, নতুন বিতরণ লাইন নির্মাণ,বিদ্যমান লাইন পুনর্বাসন ও ট্রান্সফরমার স্থাপনের কাজ চলছে। কিন্তু প্রকল্পের কাজে ধীরগতির কারণে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু এখনো প্রকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়নি। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান।