চট্টগ্রাম: দু’দিন পর বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ
নিজস্ব প্রতিবেদক/বাসস:
চট্টগ্রামে বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে সিএনজি ফিলিং স্টেশনসহ কল-কারখানা।
ঘুর্ণিঝড় মোখা’র প্রভাবে মহেশখালীতে সাগরে ভাসমান দুটি এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ রাখায় শুক্রবার রাত থেকে গ্যাস সংকট শুরু হয়। শনিবার রাত থেকেই চট্টগ্রাম জুড়ে বন্ধ হয়ে যায় গ্যাস সরবরাহ। ফলে কোথাও কোথাও প্রায় দু’দিন ধরে জ্বলেনি চুলা। বন্ধ ছিল রান্নাবান্না। এতে নগরবাসীর কষ্ট বাড়ে।
সোমবার (১৫ই মে) রাতে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)।
নগরীর পাহাড়তলীর বাসিন্দা রেহেনা আক্তার বলেন, রবিবার সকাল থেকে গ্যাস নেই। দুদিন ধরে কখনো দোকান থেকে এনে, কখনোবা রাইস কুকার দিয়ে রান্না করে খেয়েছি। আজ দুপুরের পর থেকে গ্যাস আসতে শুরু করে, তবে চাপ কম।
নাসিরাবাদ আলফালাহ গলির বাসিন্দা ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরের পর চুলার লাইনে গ্যাস আসছে। গত দুই দিন রেস্টুরেন্ট থেকে কিনে খাবার খেতে হয়েছে। রেস্টুরেন্টে চাপ থাকায় টাকা বেশি খরচ হলেও খাবারের মান ছিল নিম্ম মানের। লাইনে গ্যাস আসায় সমস্যার সমাধান হলো।
এদিকে, এখনও গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে। যে কারণে সড়কে গ্যাসচালিত যানবাহন নেই। তেলচালিত যেসব গাড়ি চলছে সেগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। যানবাহন কম থাকায় সড়কের প্রতিটি মোড়ে অতিরিক্ত যাত্রী দেখা গেছে। যেসব গণপরিবহন চলাচল করছে সেগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ রয়েছে।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন দক্ষিণ) প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে। বর্তমানে মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে ১৫০ এমএমসিএফটি গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে বাসা-বাড়ির চুলা জ্বলছে। গ্যাসের প্রেসার কম থাকায় বাকিরা তা ব্যবহার করতে পারছেন না। পুরোপুরি গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার পর সবকিছু আগের মতো সচল হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরো চট্টগ্রাম এখন এলএনজি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। আমরা দৈনিক ৩শ’ এমএমসিএফটি গ্যাস পেয়ে থাকি। যার পুরোটাই পেয়ে থাকি মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে।’
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ১২ মে রাত ১১টা থেকে মহেষখালীর এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়। এর ফলে চট্টগ্রামে বাসাবাড়ি, সার কারখানা, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। শনিবার থেকে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। রান্নার চুলা জ্বলেনি দুইদিন ধরে। সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনে গ্যাস না থাকায় অটোরিকশা, প্রাইভেট কারসহ সিএনজিচালিত যানবাহন রাস্তায় কমে যায় এবং গাড়ি ভাড়া বেড়ে যায়।