ছত্রাক থেকে বিমানের জ্বালানি!
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা বিমানের জ্বালানি তৈরিতে নতুন একটি পথ খুঁজে পেয়েছেন। এই পদ্ধতিতে সহজলভ্য কালো ছত্রাক থেকে তৈরি করা হবে বিমানের জ্বালানি। পেট্রোলিয়াম জাতীয় খনিজ থেকে বিমানের জ্বালানি তৈরি করা হয়। এই জ্বালানি তৈরির পদ্ধতি অনেক ব্যয়বহুল। তাই ছত্রাক থেকেই যদি জ্বালানি তৈরি করা সম্ভব হয় তাহলে তার দাম অনেক কমে যাবে। গবেষকরা মনে করছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই তারা ছত্রাক থেকে বিমানের জ্বালানি তৈরিতে সক্ষম হবেন।
এই গবেষণার প্রধান ওয়াশিংটন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বির্গিট আহরিং। আর সহকারী গবেষক যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জিস প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষক কেনেথ ব্রুনো। গবেষণায় বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে প্রচুর কার্বন ও হাইড্রোজেনের সমযোজী যৌগ হাইড্রোকার্বন উৎপন্ন করে। অন্যদিকে পেট্রোলিয়ামও মূলত বিভিন্ন ধরনের হাইড্রোকার্বন। এ কারণে ছত্রাকের তৈরি হাইড্রোকার্বনকে সংশ্লেষিত করে জেট ইঞ্জিনের জ্বালানি তৈরি সম্ভব। এই গবেষণায় হাইড্রোকার্বন তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়েছে অ্যাসপারগিলাস কার্বোনারিয়াস আইটেম ৫০১০ প্রজাতির একটি ছত্রাক। এই ছত্রাক মাটি, পচা পাতা এবং উচ্ছিষ্ট খাবারের ওপর সচরাচর জন্মাতে দেখা যায়। তাছাড়া ছত্রাকগুলোতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে_ হাইড্রোকার্বন উৎপাদন আরও বেড়ে যায় বলে গবেষণায় দেখানো হয়েছে। এ কারণে গবেষকরা এখন জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে ছত্রাকের হাইড্রোকার্বন উৎপাদনের হার বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যেই বেশি উৎপাদনশীল ছত্রাকের প্রকরণ উদ্ভাবিত হয়েছে। এখন নির্দিষ্ট হাইড্রোকার্বন উৎপাদনের জন্য তারা এই নতুন প্রকরণের উন্নয়ন ঘটিয়ে চলেছেন। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নীলাভ সবুজ শৈবাল ও ব্যাকটেরিয়া এবং পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে জিন কোডিং পদ্ধতি। এর আগে বির্গিট আহরিংয়ের নেতৃত্বাধীন গবেষকদল অ্যাসপারগিলাস ফাঞ্জাই নামক ছত্রাক থেকে এনজাইম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ সংশ্লেষণে সক্ষম হয়েছিল। সেই অনুপ্রেরণা থেকেই এখন তারা অ্যাসপারগিলাস কার্বোনারিয়াস আইটেম ৫০১০ থেকে জৈব জ্বালানি তৈরির চেষ্টা করছেন। গবেষণা শেষে অধ্যাপক আহরিং বলেন, ছত্রাক থেকে জ্বালানি তৈরি ব্যাপারটি খুব শিগগিরই ঘটতে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য বিশাল একটি সুযোগ। টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে।