জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ৩৭ হাজার ৫১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

বাসস:

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু সম্পৃক্ত ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য ৩৭ হাজার ৫১ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। মোট বাজেটে জলবায়ু সম্পৃক্ততার হার ৮.৯৯ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটে জলবায়ু সম্পৃক্ত বরাদ্দ ছিল ৩৭ হাজার ২’শ ১৯ কোটি টাকা যা মোট বাজেটের ৯.৯৮ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে “টেকসই উন্নয়নে জলবায়ু অর্থায়ন” শীর্ষক প্রতিবেদনে এই বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেন। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জলবায়ু সম্পৃক্ত ২৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের মোট বরাদ্দ আমাদের জাতীয় বাজেটের শতকরা ৫৪.০৯ ভাগ।
তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট বরাদ্দ ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত জলবায়ু সম্পৃক্ত বরাদ্দের তুলনায় ১৬৭.২৩ কোটি টাকা কম হলেও একই অর্থবছরে মূল বাজেটের তুলনায় ৪ হাজার ৬’শ ৪৩ কোটি টাকা বেশি।
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যাত্রা শুরু করার জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় ধরনের জাতীয় নীতি ও আইন গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ জলবায়ু আর্থিক কাঠামো (সিসিএফ), বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল এবং কর্ম পরিকল্পনা, জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (২০২৩-২০৫০) এবং বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০।
বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান (বিসিসিএসএপি), ২০০৯ হালনাগাদ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এর আগে ছয়টি বিষয়ভিত্তিক ক্ষেত্র নিয়ে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিলো। তবে নতুন পরিকল্পনায় এগারোটি বিষয়ভিত্তিক ক্ষেত্র চিহ্নিত করে বিসিসিএসএপি হালনাগাদ করা হবে।
অর্থমন্ত্রীর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিসিসিএসএপি’র ৬টি থিমেটিক এরিয়ার মধ্যে “খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য” খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে যা জলবায়ু সম্পৃক্ত মোট বরাদ্দের ৪২ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে “অবকাঠামো” খাতে। এ খাতে বরাদ্দের হার ২৯ শতাংশ। অন্যান্য থিমেটিক এরিয়াগুলো যেমন, “প্রশমন ও লো-কার্বন ডেভেলপমেন্ট” খাতে ১৩ শতাংশ; “সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা” খাতে ৭ শতাংশ; “দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা জোরদারকরণ” খাতে ৬ শতাংশ এবং “গবেষণা ও নলেজ ম্যানেজমেন্ট” খাতে ৩ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
জলবায়ু সম্পৃক্ত মন্ত্রণালয়গুলো হলো; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, খাদ্য মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।
“টেকসই উন্নয়নের জন্য জলবায়ু অর্থায়ন” শীর্ষক এই বাজেট প্রতিবেদন বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ বার্ষিক জলবায়ু বাজেট প্রতিবেদন। ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় জলবায়ু সম্পৃক্ত ২৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের জন্য পৃথক বাজেট প্রতিবেদন উপস্থাপন করে আসছে।