জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে প্যারিসে বিশ্বনেতারা
জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্বনেতারা এখন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। সোমবার এ জলবায়ু সম্মেলন শুরু হচ্ছে।
বিশ্বে উষ্ণতা কমাতে একটি ব্যাপক ভিত্তিক চুক্তির লক্ষে বিশ্বনেতারা ইতোমধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন।
গত ১৩ নভেম্বর প্যারিসে সিরিজ সন্ত্রাসী হামলায় ১৩০ জন নিহতের ঘটনা বিশ্ব নেতাদের মধ্যে ঐকমত্য তৈরিতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্যারিসে পৌঁছার কয়েক মিনিটের মধ্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদকে সাথে নিয়ে বাতাক্লঁ কনসার্ট হলে ফুল দিয়ে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। প্যারিস হামলায় এই হলেই সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়।
এদিকে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, অবিলম্বে কার্বণ গ্যাসের নিঃসরণ কমাতে না পারলে বিশ্ববাসীকে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে। কারণ বিশ্ব উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে খরা এবং সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে। ফলে নি¤œাঞ্চল তলিয়ে যাবে। বেড়ে যাবে নানা ধরণের সংঘাত।
আলোচকদের প্রতি সমঝোতার আহ্বান জানিয়ে রোববার ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরাঁ ফেবিয়াস বলেন, ‘এ বিশ্বে আমরা কিভাবে একসঙ্গে বাস করবো, তা আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে।’
জাতিসংঘ ১৯৯৫ সাল থেকে জলবায়ু পরিবর্তন শীষর্ক বার্র্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করে আসছে। কিন্তু ধনী ও দরিদ্র দেশের তীব্র মতানৈক্যের কারণে সব আলোচনাই ব্যর্থ হয়েছে।
সোমবারের জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে এখনও অনেক বিষয়ই অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
অধিকাংশ দরিদ্র দেশ বলছে, বিশ্বে উষ্ণতার জন্য ধনী দেশগুলোই অধিক দায়ী। কারণ শিল্প বিপ্লবের পর তাদের অতিরিক্ত জ্বালানী পরিবেশকে উষ্ণ করে তুলছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য ধনী দেশ বলছে, চীন, ভারত ও অন্যান্য উদীয়মান দেশেরও বিশ্ব উষ্ণতায় যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। কারণ এসব দেশ তাদের দ্রুত বিকাশমান অর্থনৈতিক স্বার্থে অধিক জ্বালানি পোড়াচ্ছে।
এদিকে জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে বিশ্বব্যাপী ৫ লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিবাদ-বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে। তাদের দাবি এসব মতানৈক্য দূর করে পৃথিবীকে বাঁচাতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের একটি টেকসই চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে।
লন্ডনের হাইড পার্কে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে প্রায় ৫০ হাজার লোক অংশ নেয়। তাদের হাতে নানা স্লোগান লেখা পাøকার্ড ছিল। একটি পাøকার্ডে লেখা ‘আমাদের দ্বিতীয় কোন বিশ্ব নেই’। অপর আরেকটি পাøকার্ডে লেখা ‘আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত প্রয়োজন’।
প্যারিসে জঙ্গি গ্রুপ ইসলামিক স্টেটের হামলার কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। তবুও জঙ্গিদের উপেক্ষা এবং জলবায়ু সম্মেলনে নিজেদের কন্ঠস্বর শোনার প্রত্যয় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই প্যারিসে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধনের জন্য হাজার হাজার লোক জড়ো হয়েছে।