জিই বাংলাদেশে ৬হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ করছে: পিডিবি ও সামিটের সাথে চুক্তি
বাংলাদেশে আমেরিকার কোম্পানি জেনারেল ইলে্ট্রিক (জিই) ছয় হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্ত্র স্থাপন করতে যাচ্ছে। এরমথ্যে বেসরকারিখাতে সামিটের সাথে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। আর সরকারের সাথে অর্থাৎ পিডিবির সাথে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। পুরোটাই হবে আমদানি করা তরল গ্যাস দিয়ে। এজন্য বঙ্গোপসাগরে টার্মিনাল করা হবে। আজ বুধবার পিডিবি ও সামিটের সাখে এবিষয়ে আলাদা আলাদা সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।
পিডিবি ও জিই চুক্তি: মহেশখালিতে ৩৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও আমেরিকার কোম্পানি জেনারেল ইলে্ট্রিক (জিই) যৌথ ভাবে মহেশখালীতে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে যাচ্ছে। আমদানি করা এলএনজি দিয়ে এই বিদ্যুৎ হবে। আজ বুধবার বিকেলে বিদ্যুৎ ভবনের মুক্তি হলে সমঝোতা পিডিবি ও জিই এরমধ্যে এবিষয়ে স্মারক সই হয়েছে।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ. বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট এবং জিই পাওয়ারের প্রেসিডেন্ট ও সিইও রাসেল স্টোকস উপস্থিত ছিলেন।
তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, এতো বড় চুক্তি দেশে এই প্রথম। বিদ্যুৎখাতে এখন বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে।
জেনারেল ইলেকট্রিকের (জিই) প্রেসিডেন্ট রাসেল স্টোকস বলেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উৎপাদন বোর্ডের সঙ্গে কাজ করতে পারবো বলে ধন্য মনে করছি।
মহেশখালী অঞ্চলে মোট ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে জেনারেল ইলেকট্রিক।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিভিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছে। জিই’র সঙ্গে এই চুক্তি বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সেই চেষ্টাকে আরও এগিয়ে নেবে। এটা সরাসরি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
বিদ্যুতে বেসরকারিখাতের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ: সামিট ও জিই চুক্তি
সামিট কর্পোরেশন ও জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) যৌথভাবে মাতারবাড়িতে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে যাচ্ছে। আমদানি করা তরল গ্যাস (এলএনজি) দিয়ে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবেক। এতে খরচ হবে তিন বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২৫ হাজার কোটি ্টাকা। বিদ্যুৎখাতে বাংলাদেশে বেসরকারিভাবে এটা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
আজ বুধবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও-এ এবিষয়ে উভয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্র ও এলএনজি টার্মিনাল দুটোর জন্যই এই বিনিয়োগ করা হবে।
বিনিয়োগের বেশিরভাগই করছে সামিট। অর্থাৎ বিদ্যুৎকেন্দ্রর প্রধান অংশীদার সামিট। জিই এখানে সম্পদ ও প্রযুক্তি অংশীদার।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, জিই পাওয়ারের প্রেসিডেন্ট এন্ড সিইও রাসেল স্টোকস, সামিটের চেয়ারম্যান আজিজ খান, মিতসুবিশি কর্পোরেশনের ইনফ্রাস্ট্রাকচার বিজনেস ডিভিশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তেতসুজি নাকাগাওয়া উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে তৌফিক ই ইলাহী বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের প্রত্যেক জনগণ বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে। নসরুল হামিদ বলেন, আগামীতে বিদ্যুতে বড় ধরণের পরিবর্তন হবে। সঞ্চালন ও বিতরণখাতেও বেসরকারি বিনিয়োগ করার সুযোগ দেয়া হবে। আজিজ খান বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাতের অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত। ২০২১ সালে সকলকে বিদ্যুৎ দেয়ার সরকারের যে লক্ষ তা এগিয়ে নিতে এই প্রকল্প বড় ভূমিকা রাখবে আশা করি।
১৩ই মার্চ সিংগাপুরে মিতস্যুবিশির সাথে সামিটের যৌথ চুক্তির ধারাবাহিকতায় জিই’র সাথে এই চুক্তি হলো।