জিসিএম এর নতুন চেয়ারম্যান

মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ী দাতো মাইকেল ট্যাং এশিয়া এনার্জির আওতাধীন কোম্পানি জিসিএম রিসোর্সেস এর চেয়ারম্যান হিসাবে পুনঃনির্বাচিত হয়েছেন।
শুক্রবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে নির্বাচিত করা হয়। জিসিএম বাংলাদেশ কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বার্ষিক সাধারণ সভায় দেয়া ভাষণে মাইকেল ট্যাং নিজের ও কোম্পানির পক্ষ থেকে ফুলবাড়ি কয়লাখনি উন্নয়নে সরকার ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে গভীরভাবে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
দাতো মাইকেল ট্যাং বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার কয়লা থেকে ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উদ্যোগ নিয়েছে এশিয়া এনার্জি‌ তার অংশ হতে চায়।
বড় আকারের কয়লভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারি সিদ্ধান্ত, গতসপ্তাহে প্রকাশিত জাতিসংঘ মানব উন্নয়ন রিপোর্ট ২০১৫ এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। সরকারের ইতিবাচক কার্যক্রম সত্ত্বেও এ রিপোর্টে বিশ্বের ১৮৮ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪২তম। মানব উন্নয়ন সূচকে জ্বালানি ব্যবহারের গভীর যোগসূত্র থাকায় মধ্যম আয়ের দেশ বা এর উর্দ্ধে ওঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে যা শিল্পবিপ্লব তরান্বিত করে বৃহত্তর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে।
জিসিএম চেয়ারম্যান এশীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান ও ভবিষ্যতে কয়লার জোরালো ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বিশ্বের ২৭টি দেশে চীনের সরকারি সংস্থাগুলো ৯২টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উন্নয়ন করছে যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১০৭ গিগাওয়াট। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগ অর্থসহায়তা করছে চীনা এক্সিম ব্যাংক। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান তাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছে আর ভারত ঘোষণা করেছে দেশটি ২০২০ সালের মধ্যে কয়লা উৎপাদন দ্বিগুণ করতে মাসে একটি করে কয়লাখনি চালু করার পর্যায়ে রয়েছে। সম্প্রতি খবর বেরিয়েছে, চীন, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া মিলে বিশ্বের নতুন আহরিত কয়লার ৭১ শতাংশ ব্যবহার করছে এবং পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের মতো দেশ শীঘ্রই এশীয় প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে হার ৮০ শতাংশে নিয়ে যাবে। ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র বিপর্যয়ে পারমাণিক কার্যক্রম কমানোর কারণে জাপান আগামী একদশকে ৪১টি নতুন কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক জ্বালানি হওয়ার কারণে দেশে দেশে এসব কার্যক্রম চলছে আর উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটা আরও গুরুত্বপূর্ণ।
জিসিএম এর প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ প্রতিনিধি গ্যারি লাই এজিএম যোগদান শেষে রোবাবার লন্ডন থেকে ঢাকা ফিরে বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হলেও কার্বন ডাই অক্সাইডসহ গ্রীণ হাউস গ্যাসের উল্লেখযোগ্য নির্গমণকারী নয়। বাংলাদেশের মাথাপিছু কার্বন ডাই্ অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা অঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। এমনকি ফূলবাড়ি প্রকল্পে চার হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম কম কার্বন নির্গমণকারী দেশ হিসাবে থাকবে।