নিজস্ব প্রতিবেদক/বণিকবার্তা:
‘বৈশ্বিক এ সংকটের সময়ে জ্বালানি খাতের ভবিষ্যৎ একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, তারা যে দামে জ্বালানি কিনছে, সে দামেই বিক্রি করছে। সরকার এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে—জ্বালানি খাতে আর কোনো ভর্তুকি দেয়া হবে না। ক্রমান্বয়ে অ্যাডজাস্টমেন্টের দিকে এগিয়ে যাওয়া হবে।’ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের দ্বিতীয় দিনে ‘স্ট্রাটেজিক অ্যাপ্রোচ ফর এনার্জি সিকিউরিটি টু অ্যাটেইন সাসটেইনেবল গ্রোথ’ শীর্ষক অধিবেশনে এসব কথা বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি চলমান বৈশ্বিক সংকটে জ্বালানি খাতকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যা দেন। এ খাতে নতুন করে আর ভর্তুকি না দিয়ে ক্রমান্বয়ে সমন্বয়ে যাওয়া হবে বলে জানান।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের দ্বিতীয় দিন গতকাল সব মিলিয়ে তিনটি ‘প্লেনারি’ ও ছয়টি ‘প্যারালাল’ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ, ফাইন্যান্স মার্কেট, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামো, টেক্সটাইল, জ্বালানি, কৃষি, ভোগ্যপণ্য এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ের ওপর অনুষ্ঠিত এসব অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলমান সামিটের দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠিত হয় ‘১০০ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিস ইন কি সেক্টর’ শীর্ষক প্লেনারি অধিবেশন। পরে ‘ডেভেলপিং লংটার্ম ফাইন্যান্স মার্কেটস টু সাপোর্ট নিউ গ্রোথ অপরচুনিটিজ’ ও ‘হারনেসিং দ্য ডিজিটাল ইকোনমি টু আনলক নিউ ফ্রন্টিয়ারস ফর এ স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক আরো দুটি প্লেনারি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
এর মধ্যে ‘হারনেসিং দ্য ডিজিটাল ইকোনমি টু আনলক নিউ ফ্রন্টিয়ারস ফর এ স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্লেনারি অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ আসছে। কভিডে ই-কমার্স ব্যবসা-বাণিজ্যের লাইফলাইনে পরিণত হয়েছে। আমাদের এখন লক্ষ্য ইনোভেশন ইকো সিস্টেম গড়ে তোলা।’
মাস্টার কার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামালের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন, বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কামাল কাদির প্রমুখ।
‘প্যারালাল’ অধিবেশনগুলোর মধ্যে ‘লেভারেজিং গ্রোয়িং মিডল অ্যান্ড এফ্লুয়েন্ট ক্লাস ফর এ ভাইব্রান্ট কনজিউমার গুডস সেক্টর’ বিষয়ক অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এতে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। অ্যাপেক্স গ্রুপ, সিঙ্গার, ইউনিলিভারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। ভোগ্যপণ্য খাতে খরচ কমিয়ে টেকসই মানোন্নয়নের জন্য সরবরাহ শৃঙ্খল ঠিক রাখা, রিসাইক্লিং ও জয়েন্ট ভেঞ্চারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা।
‘জাপান বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট: অপরচুনিটি অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ বিষয়ক অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, জাপানের রাষ্ট্রদূত কিমিনরি ইয়ামাসহ জেট্রো, জেবিসিসিইসি, এফবিসিসিআই, বিজেআইটি, জেসিআইএডির প্রতিনিধিরা। এতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্পবিষয়ক মন্ত্রী ইয়াসুতসি নিশিমুরার পক্ষ থেকে ভিডিও বার্তা পাঠানো হয়। আলোচনায় দুই দেশের প্রতিনিধিরা পরস্পরের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সহযোগিতা আরো জোরদার করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
‘টুওয়ার্ডস অ্যা গ্লোবালি কমপিটিটিভ এগ্রি বিজনেস সেক্টর: ইমপেয়ারিং অপরচুনিটি ইন এগ্রো ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট’ শীর্ষক অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্ভাবনাকে আরো বাড়াতে দক্ষ জনবল তৈরি করা খুবই জরুরি। এটি করা গেলে কৃষি খাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। বর্তমান সরকার কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সব ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে আসছে। এর লক্ষ্য কৃষিকে এগিয়ে নেয়া।’ এ অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী।
‘বিল্ডিং কানেক্টিভিটি অ্যান্ড প্রডাকশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর দ্য নেক্সট ফেস অব গ্রো: ইনভেস্টিং ইন লজিস্টিকস অ্যান্ড ইকোনমিক জোনস’ ও ‘টুওয়ার্ডস হান্ড্রেড বিলিয়ন অ্যাপারেল অ্যান্ড টেক্সটাইল সেক্টর: লেভারেজিং সাসটেইনাবিলিটি, কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ, লেভারেজিং গ্রোয়িং মিডল অ্যান্ড এফ্লুয়েন্ট ক্লাস ফর এ ভাইব্রান্ট কনজিউমার গুডস সেক্টর, স্ট্রাটেজিক অ্যাপ্রোচ ফর এনার্জি সিকিউরিটি টু অ্যাটেইন সাসটেইনেবল গ্রোথ’ শীর্ষক আরো দুটি ‘প্যারালাল’ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।